সুজন খান :
যদি সুন্দর একটা মুখ পাইতাম, মহেশখালির পানের খিলি তারে বানায় খাওয়াইতাম’ এমনই এক রোমান্টিক গান দিয়ে বুঝা যায় পান একটি সৌখিন খাবার। এক সময় আমাদের দেশে ঘরে ঘরে দাদা-দাদী, নানা-নানী ও অন্যান্য বয়স্করা পান খেতেন। কিন্তু এখন সকল বয়সের নারী-পুরুষরা শখের বসে হলেও পান খেয়ে থাকেন। এই পান কেবল স্বভাব হিসেবেই নয়, বরং বাংলাদেশে ঐতিহ্যগত ভাবে সামাজিক রীতি, ভদ্রতা ও আচার-আচরণের অংশ হিসেবেই পানের ব্যবহার চলে আসছে।
বর্তমান সময় ধারাবাহিক ভাবে পাল্টে যাওয়ার সাথে সাথেই ভিন্নতা এসেছে পান তৈরির প্রস্তুত প্রণালিতে। এমনকি স্বাদেও এসেছে ভিন্নতা। বর্তমানে বাংলাদেশের বিভিন্ন জায়গায় দেখা মেলে বাহারি রকমের পান। এমনই এক ভিন্ন সাধের পানের দোকান ঢাকার দোহার উপজেলার নারিশা বাজারে মোঃ নূরুল ইসলাম (টেলি ভাই) টেলি ভাইয়ের মিষ্টি পানের দোকান। যা তিনি দীর্ঘ ৪০ বছর যাবত পরম যতেœর সাথে বিভিন্ন সাধের পান তৈরি করে নিজ হাতে মানুষকে খাওয়াচ্ছেন এবং মানুষও তা তৃপ্তি সহকারে খাচ্ছেন ।
টেলি ভাইয়ের দোকানে বিভিন্ন সাধের পানের মধ্যে রয়েছে খরজর্দ্দার পান ৩০ টাকা, ছন্দে ছন্দে ৫০ টাকা, মন আনন্দে ৭০ টাকা, আমি বনফুল ১০০ টাকা, স্পেশাল ১৫০ টাকা, জামাই সোহাগী ৩০০ টাকা, বউ সোহাগী ৭০০ টাকা।
পান দোকানদার মোঃ নূরুল ইসলাম (টেলি ভাই) বলেন, আমার এই মিষ্টি পানের দোকান সকাল ৯টা থেকে রাত ৯টা পর্যন্ত বিরতিহীনভাবে খোলা থাকে। আমার এই মিষ্টি পান খেতে দোহার, নবাবগঞ্জ, কেরানীগঞ্জ ও মুন্সীগঞ্জের শ্রীনগর উপজেলার বিভিন্ন এলাকা থেকে বিভিন্ন লোকজন এসে পান খেয়ে থাকেন। এছাড়াও আমার এই বানানো মিষ্টি পান বিশ্বের বিভিন্ন দেশে নিয়ে যায় লোকজন। আমার মিষ্টি এই পান প্রস্তুতে রয়েছে প্রায় ১০০ ধরনেরও বেশি উপকরণ। যার মাধ্যমে আমি এই বাহারী সাধের পান প্রস্তুত করে মানুষকে খাওয়ানো হয়। খুবই মজা ও সুস্বাধু আমার এই পান।
রশিক এই পান দোনদার গানের তালে তালে শরীরে বিভিন্ন অঙ্গ প্রতঙ্গ হেলিয়ে ধুলিয়ে পান বানিয়ে কাস্টমারদের খাইয়ে মনের ভেতর আনন্দের মাতয়ারা করে তুলেন। যা কাস্টমাররা উপভোগ করেন মন উজার করে।
দোহার উপজেলার উত্তর জয়পাড়া থেকে পান খেতে আসা মোঃ আলী হায়দার জানান, টেলি ভাইয়ের এই মিষ্টি পানের অনেক প্রসংশা শুনেছি। আমি আমার এক বড় ভাইয়ে সাথে এসেছি এই মিষ্টি পান খেতে। যদিও আমি পান খাই না তবে সখের বসে এই টেলি ভাইয়ের মিষ্টি পান খেতে এসেছি। আমার কাছে অনেক ভাল লেগেছে। অনেক মজা পেয়েছি এই পান খেয়ে।
আব্দুর রহমান বলেন, টেলি ভাইয়ের এই মিষ্টি পান খুবই ভাল ও সুস্বাধু। আমার অনেক ভাল গেছে। আমি মাঝে মাঝেই এখানে এসে টেলি ভাইয়ের তৈরি বিভিন্ন সাধের মিষ্টি পান খেয়ে থাকি।
মুন্সীগঞ্জের শ্রীনগর থেকে আসা আব্দুল গফফুর রহমান বলেন, আমি টেলি ভাইয়ের পানের প্রসংসা শুনে শ্রীনগর থেকে এখানে এসেছি এই মিষ্টি পান খেতে। পান খেয়েছি, অনেক সুস্বাধু ও মাজাদার পান। পান খেয়ে আমার অনেক ভাল লেগেছে।