শরীফ হাসান :
ঢাকার দোহার-নবাবগঞ্জে “ঘূর্ণিঝড় মোখা” ও বৃষ্টির আশংকা নিয়ে আতঙ্কে রয়েছে এই অঞ্চলের লোকজন। এরই মধ্যে দোহার পৌরসভা ও দোহার- নবাবগঞ্জ উপজেলা প্রশাসন প্রস্ততি গ্রহণ করেছে “ঘূর্ণিঝড় মোখা” ও দূর্যোগ মোকাবেলায়। “ঘূর্ণিঝড় মোখা” আতঙ্কে দোহার-নবাবগঞ্জের কৃষকেরা ইতোমধ্যেই ধান কাটা শুরু করেছেন। গত বছরের তুলনায় এবার ধান বেশী ভালো হয়েছে বলে জানিয়েছে কৃষান ও জমির মালিকরা। তাই কৃষকরা শেষ সময় এসে সবকিছু ভুলে ধান কাটায় ব্যস্ত হয়ে পড়েছেন।
শনিবার (১৩ মে) সকালে দেখা যায়, দোহার-নবাবগেঞ্জর বিভিন্ন এলাকার চকে ও হাওরের জমিতে সোনালী ধানের মহাসমারোহ যেন কৃষকের মুখে সোনালী হাসির ঝিলিক নিয়ে এসেছে। কিন্তু “ঘূর্ণিঝড় মোখা” আতঙ্ক থাকা সত্যেও মহা-আনন্দে ধান কেটে গরুর গাড়ি, মাহেন্দ্রা ও মাথায় করে বাড়িতে নিয়ে যাচ্ছেন কৃষকরা।
নবাবগঞ্জের আড়িয়াল বিল এলাকার কৃষক আউয়াল উদ্দিন বলেন, আকাশ মেঘলা হলেই আকাশের পানে চেয়ে থাকি কখন কালো মেঘ ভাসে। ভয় হয় কখন ঝড় আসে। সেই সঙ্গে বৃষ্টি ও শিলা পড়লে তো আর ফসলের রক্ষা নাই। তাই যেভাবেই হোক ধান কেটে মাড়াই করে গোলায় ভরতে হবে। আর তাই ধান কাটায় ব্যস্ত সময় পার করছি।
নবাবগঞ্জের শিকারি পাড়া গ্রামের কৃষক ইব্রাহিম বলেন, আল্লাহ রহমতে এবার ধানের ফসল ভালো হয়েছে। তাই অতিরিক্ত শ্রমিক নিয়ে ধান কাটায় ব্যস্ত সময় পার করছি। গত বছরের তুলনায় আল্লাহ রহমতে এবার ধান চাষে ভাল ফলন হয়েছে। আর এই ধান দিয়ে আমাদের সারা বছর চলে যাবে ইনশাআল্লাহ।
দোহার উপজেলার দক্ষিন জয়পাড়া গ্রামের কৃষক মোঃ আলি বলেন, এবার ৭ বিঘা জমিতে ধান চাষ করেছি, ফলনও ভালো হয়েছে। ইতিমধ্যে ৪ বিঘা জমির ধান ঘরে তুলেছি বাকী আছে ৩ বিঘা। এই বাকি ৩ বিঘা জমির ধান কেটে ঘরে তুলতে চিন্তায় আছি। ঝড়-তুফান হলে তো উপায় নাই, ধান নষ্ট হয়ে যাবে। আর তাই সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত ফসলের মাঠে কাজ করছি।
দোহারের বানাঘাটা গ্রামের কৃষক বীর মুক্তিযোদ্ধা সালাউদ্দিন বলেন, “ঘূর্ণিঝড় মোখা” আতঙ্কে আমরা সবাই দ্রুত চেষ্টা করছি ধান কাটতে ও মাড়াই করতে। কারণ ঝড়ের আগেই সব ধান কেটে ঘরে তুলতে হবে। আর সেই দ্রুত চেষ্টার জন্য আমরা হারভেস্টার ম্যাশিনের মাধম্যে ধান কাটতে শুরু করেছি। কারণ এতে অনেক সময় কম লাগে এবং খরচও কম। হারভেস্টার ম্যাশিন দিয়ে ধান কাটায় আমাদের সুভিধাও অনেক। যেখানে শ্রমিক দিয়ে ধান কাটলে এক হাজার টাকা লাগে আর সেখানে এই হারভেস্টার দিয়ে ধান কাটলে চারশত থেকে পাঁচ শত টাকা লাগে এবং সময়ও অনেক কম লাগে।