সুজন খানঃ
দীর্ঘ ২২ বছর পর ঢাকার দোহার উপজেলার পৌরসভা নির্বাচনে শান্তিপূর্ণভাবে ভোট গ্রহন শেষে দোহার পৌরসভা নির্বাচনে মেয়র পদে জগ প্রতীক নিয়ে মোঃ আলমাছ উদ্দিন বিজয়ী হয়েছেন।
বুধবার (২৭ জুলাই) রাতে দোহার পৌরসভা নির্বাচন রির্টানিং কর্মকতা মোঃ আশরাফুল আলম জানান, ‘শান্তিপূর্ণ পরিবেশে ভোট প্রদান শেষে অবাধ, সুষ্ঠ ও নিরপেক্ষ নির্বাচন অনুষ্ঠানের মধ্যে দিয়ে মেয়র পদে জগ প্রতীক নিয়ে মোঃ আলমাছ উদ্দিন বেসরকারিভাবে বিজয়ী হয়েছেন।
বিজয়ী মোঃ আলমাছ উদ্দিন জগ প্রতীক নিয়ে পেয়েছেন ৬ হাজার ৬৯৪ ভোট, নিকটতম প্রতিদ্বন্দী প্রার্থী নজরুল ইসলাম বাবুল হেলমেট প্রতীক নিয়ে ৫ হাজার ২৩ ভোট, আব্দুর রহমান আকন্দ নারিকেল গাছ প্রতীক নিয়ে ৪ হাজার ৫৬৬ ভোট, জামাল উদ্দিন আহমেদ মোবাইল ফোন প্রতীক নিয়ে ২ হাজার ৬০৯ ভোট, জাহাঙ্গির আলম চামচ প্রতীক নিয়ে ২ হাজার ৩০৫ ভোট, নূরুল ইসলাম বেপারী ইস্ত্রি প্রতীক নিয়ে ২ হাজার ৫৫০ভোট, আমজান হোসেন হাতপাখা প্রতীক নিয়ে ১ হাজার ৩৮ ভোট, ফরহাদ হোসাইন কম্পিউটার প্রতীক নিয়ে পেয়েছেন ৭ শত ৩২ ভোট।
এ নির্বাচনে ভোটার সংখ্যা ৪৩ হাজার ৬৬ ভোট এর মধ্যে বৈধ ভোটের সংখ্যা ২৫ হাজার ৫১৭ ভোট ও বাতিল হয়েছে ৪৯ ভোট।
অপর দিকে, কাউন্সিলর পদে ১নং ওয়ার্ডে টেবিল ল্যাম্প প্রতীক নিয়ে আলমগীর মুবীন, ২নং ওয়ার্ডে উটপাখি প্রতীক নিয়ে মোঃ শওকত হোসেন, ৩নং ওয়ার্ডে টবিল ল্যাম্প প্রতীক নিয়ে আব্দুস সালাম শুকুর, ৪নং ওয়ার্ডে ব্রীজ প্রতিক নিয়ে পাপেল মাহমুদ নিজাম, ৫নং ওয়ার্ডে পানির বোতল প্রতীক নিয়ে মোঃ ওয়াসিম চোকদার, ৬নং ওয়ার্ডে ডালিম প্রতীক নিয়ে মোঃ হুমায়ূন কবির, ৭নং ওয়ার্ডে উটপাখি প্রতীক নিয়ে মোঃ উদয় হোসাইন ৮নং ওয়ার্ডে ব্লাকবোর্ড প্রতীক নিয়ে মোঃ জাফর ইকবাল (জাহিদ বেপারী) ও ৯নং ওয়ার্ডে মোহাম্মদ মোরাদ ডালিম প্রতীক নিয়ে বেসরকারী ভাবে নির্বাচিত হন।
এছাড়া সংরক্ষিত মহিলা আসন ১ এ ইসরাত জাহান বনানী (চশমা), সংরক্ষিত মহিলা আসন-২ এ স্মৃতি আক্তার (জবা ফুল)ও সংরক্ষিত মহিলা আসন-৩ এ ফরিদা ইয়াছমিন (আনারস) বেসরকারিভাবে নির্বাচিত হয়েছেন।
দোহার পৌর নির্বাচনে প্রথমবারের মত সব কেন্দ্রে ইলেকট্রনিক ভোটিং মেশিন বা ইভিএম’এর মাধ্যমে এই ভোট গ্রহণ কার্যক্রম অনুষ্ঠিত হয়েছে।
নির্বাচন কমিশন সূত্রে জানা যায়, দোহার পৌরসভায় মোট ভোটার ছিলো ৪৩ হাজার ৬৬ জন। তাদের মধ্যে পুরুষ ভোটার রয়েছে ২১ হাজার ৭৪০ জন ও নারী ভোটার রয়েছে ২১ হাজার ৩২৬ জন।
এই পৌর নির্বাচনে মেয়র পদে লড়েছেন ৮ জন প্রার্থী। তাদের মধ্যে ৫ জনই আওয়ামী লীগের রাজনীতিতে জড়িত। অন্যদের মধ্যে দুইজন সতন্ত্র প্রার্থী ও অপর একজন ইসলামী আন্দোলন থেকে মনোনীত প্রার্থী। এছাড়াও সাধারন কাউন্সিলর পদে ৬১ জন ও সংরক্ষিত নারী কাউন্সিলর পদে ১২ জন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দিতা করছেন।
সরেজমিন পরিদর্শন করে দেখা গেছে, প্রায় বেশির ভাগ ভোট কেন্দ্রে ভোটারদের উপস্থিতি ছিলো বেশ ভালো। লক্ষ্য করা গেছে প্রতিটি কেন্দ্রেই নারী ও পুরুষ ভোটারদের সরব উপস্থিতি। তবে পুরুষ ভোটাদের থেকে নারী ভোটারদের উপস্থিতি ছিলো সব থেকে বেশি। দীর্ঘ প্রতিক্ষার পর পৌর নির্বাচন ঘিরে পুরো এলাকা জুড়েই এখন উৎসব মুখর পরিবেশ বিরাজ করছে। সকাল থেকে ভোট গ্রহন শেষ পর্যন্ত কোন ভোট কেন্দ্র থেকেই কোন ধরনের অপ্রীতিকর ঘটনার ঘটেনি। শান্তিপূর্ণ ও উৎসব মুখর পরিবেশে ভোটে অংশ গ্রহণ এবং ভোট দিতে আসতে পারায় অত্যাধিক খুশি ছিলো ভোটাররাও।
ভোটাররা বলছেন, প্রথমবারের মত ইভিএমে মেশিনে ভোট গ্রহন হওয়ায় সকাল থেকে কিছুটা বিড়ম্বনার শিকার হতে হয়েছে। মেশিন গুলো অনেক স্লো কাজ করেছে। তবে ধীরে ধীরে সে বিড়ম্বনা কাটিয়ে উঠে পুরো উদ্যমের সাথে ভোট প্রদান করেছেন ।
দোহার থানা ওসি মোস্তফা কামাল জানান, ভোটের নিরাপত্তায় সর্বোচ্চ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছিল। প্রতিটি কেন্দ্রে নিরাপত্তার সার্থে ও গুরুত্বপূর্ণ কেন্দ্রে কঠিন ভাবে নিরাপত্তা জোড়দারসহ বেশি সংক্ষক র্যাব, বিজিবি, পুলিশ ও আনসার সদস্যদের মোতায়েন করা হয়েছিল।