দানিচ খান জুয়েল, সৌদি আরব ও মধ্যেপ্রাচ্যের সিনিয়র প্রতিবেদক :
সুদানে অবিলম্বে স্থায়ী যুদ্ধ বিরতি ও শান্তি প্রক্রিয়া শুরু করার আহবান জানিয়েছে বাংলাদেশ। সৌদি আরবের জেদ্দাস্থ সদর দপ্তরে বুধবার (৩ মে) সুদান পরিস্থিতি নিয়ে ইসলামি সহযোগিতা সংস্থা -ওআইসির এক জরুরী সভায় বিদ্যমান সুদানের সশস্ত্র বাহিনী ও সুদান র্যাপিড সাপোর্ট ফোর্সেস (আরএসএফ) এর প্রতি এ আহবান জানায় বাংলাদেশ।
সৌদি আরবের সভাপতিত্বে সুদানের বর্তমান পরিস্থিতি নিয়ে আলোচনার জন্য ওআইসির নির্বাহী কমিটির এক জরুরি সভা আজ সংস্থাটির জেদ্দাস্থ সদর দপ্তরে অনুষ্ঠিত হয়। ওআইসির স্থায়ী প্রতিনিধি ও সৌদি আরবে নিযুক্ত বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত ড. মোহাম্মদ জাবেদ পাটোয়ারী বিপিএম (বার) ওআইসির সভায় এ আহবান জানান।
সভার শুরুতেই ওআইসি মহাসচিব হিসেন ব্রাহিম তাহা সুদান পরিস্থিতি সম্পর্কে তাঁর বক্তব্য তুলে ধরেন।
এ সময় রাষ্ট্রদূত ড. মোহাম্মদ জাবেদ পাটোয়ারী বলেন, সুদানের এ লড়াই শান্তি, স্থিতিশীলতা ও সমৃদ্ধির জন্য সুদানের জনগণের দীর্ঘ দিনের আকাঙ্খাকে ক্ষুর্ণ করছে। সেখানে যুদ্ধের ফলে ব্যাপক মানুষের জীবন ও সম্পদের ক্ষয়-ক্ষতি ও ভয়ের পরিবেশ সৃষ্টি হয়েছে এবং এ বিষয়ে বাংলাদেশ গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করছে।
রাষ্ট্রদূত বলেন, যুদ্ধের ফলে ইতিমধ্যে সুদানে অনেক মানুষ নিরাপদ আশ্রয়ের আশায় বাস্তুচ্যুত হয়েছে, খাদ্য সংকট দেখা দিয়েছে, আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতির কারনে সেখানে ব্যপক লুটপাট হচ্ছে- স্থানীয় জনগন ও বাংলাদেশিসহ বিভিন্ন দেশের প্রবাসী বাসিন্দারা যার শিকার হচ্ছেন। অনেক বাংলাদেশী তাদের সর্বস্ব হারিয়েছেন এই লুটপাটের শিকার হয়েছে।
রাষ্ট্রদূত বলেন, সুদানে প্রায় দেড় হাজার বাংলাদেশী নাগরিক বসবাস করছেন যারা প্রত্যাবাসনের জন্য অপেক্ষা করছেন। বাংলাদেশ সরকার তাঁদের সুদান থেকে নিরাপদে প্রত্যাবাসনের চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। সুদান থেকে বাংলাদেশিসহ বিদেশী নাগরিকদের সরিয়ে নেওয়ার জন্য সৌদি আরবের আন্তরিক প্রচেষ্টার জন্য ধন্যবাদ জানান রাষ্ট্রদূত।
রাষ্ট্রদূত ড. মোহাম্মদ জাবেদ পাটোয়ারী বলেন, বাংলাদেশ একটি শান্তিপ্রিয় দেশ এবং আমরা আশা করি যুদ্ধ বন্ধে ওআইসি, আফ্রিকান ইউনিয়ন, আরবলীগ এবং জাতিসংঘ একটি গঠনমূলক ভুমিকা পালন করবে এবং সুদান সংকটের শান্তিপূর্ণ সমাধানের জন্য যুদ্ধরত সকল পক্ষকে আলোচনার টেবিলে নিয়ে আসবে যা সুদানে অবিলম্বে শান্তি, স্থিতিশীলতা এবং সমৃদ্ধি ফিরিয়ে আনবে।
এ সময় ওআইসির জরুরী সভায় সুদান, তুরস্ক, আরব আমিরাত, কুয়েত, বাহরাইন, মালয়েশিয়া, ইন্দোনেশিয়া, আলজেরিয়া, ইরাক, মিশর,পাকিস্তান, গাম্বিয়া, মৌরিতানিয়া, ক্যামেরুন, জিবুতি, চাদ, তিউনিসিয়া, ফিলিস্তিন, লিবিয়া, মরক্কো, লেবানন, জর্দানসহ অন্যান্য দেশের স্থায়ী প্রতিনিধিরা বক্তব্য প্রদান করেন।
ওআইসির জরুরী সভায় সুদানে যুদ্ধ বন্ধ, শান্তি প্রক্রিয়া শুরু ও অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে বিভিন্ন কার্যকরী পদক্ষেপ গ্রহণের আহবান জানিয়ে একটি যৌথ ঘোষনাপত্র গৃহীত হয়।