26 C
Dhaka
সোমবার, অক্টোবর ৬, ২০২৫

বন্যার পানিতে ডুবলো কৃষকের স্বপ্নের পান বরজ

spot_img

আরো সংবাদ

spot_img
spot_img

দুর্গাপুর, রাজশাহী প্রতিনিধি :
রাজশাহীর দুর্গাপুরে বন্যার পানিতে ডুবে গেছে কৃষকের স্বাবলম্বী হওয়ার স্বপ্নে রোপণ করা শতশত বিঘা পান বরজ। ডুবে যাওয়ার ঝুঁকিতে থাকা বরজ গুলো বাঁচাতে দিন-রাত পানি সেঁচে বাঁধ নির্মাণ করে প্রাণপণ চেষ্টা করে চলছে কৃষকরা। দেখা দিয়েছে খাদ্য সংকট, অনাহারে দিনপার করছে গবাদিপশু।

উপজেলা কিসমতগনকৈড় ইউপির রাতুগ্রাম বীলের অধিকাংশ পান বরজ, বারনই নদীর অত্যধিক প্রবাহ ও লাগাতার বর্ষণ বন্যায় ডুবে গেছে। ইনকামের অবলম্বন হারিয়ে মানবতর জীবনধারণ করেছেন কৃষক ও বরজ শ্রমিকেরা।

কৃষি সম্প্রসারণের তথ্য মতে, উপজেলা জুড়ে ৫৫০ হেক্টর জমিতে পান বরজ রয়েছে। প্রায় ১ হাজার ৮৭৫ টি বরজ থেকে বছরে উৎপাদিত হয় ২১ হাজার ২৫০ মেট্রিক টন পান। যেখানে প্রতিদিন শ্রমিক হিসেবে কাজ করে প্রায় ১০ হাজার শ্রমিক।

সরজমিনে গিয়ে রাতুগ্রাম এলাকায় গিয়ে দেখা যায়, এলাকাটির অধিকাংশ কৃষকের প্রধান অর্থকারী ফসল পান উৎপাদন। আকর্শিক বন্যায় কিছু বুঝে উঠার আগেই পান বরজ তলিয়ে গিয়ে পঁচে সম্পূর্ণ নষ্ট হয়ে গেছে শত-শত পান বরজ । বাকিগুলো আংশিক ডুবে বিভিন্ন যায়গায় জলবদ্ধতার সৃষ্টি হয়েছে।

রাতুগ্রাম এলাকার পানচাষী মনসুর রহমান জানান, আমার দুটি পান বরজ রয়েছে একটি সম্পূর্ণ ডুবেছে আরেকটি যেকোনো মুহুর্তে ডুবে যেতে পারে। পানি সেঁচে পান বরজটি রক্ষার চেষ্টা করছি। এমন-ই পানের দাম নেই তারপর বন্যায় বরজ মরে যাচ্ছে। এতো লোকশান কিভাবে মোকাবিলা করবো জানিনা। সরকার আমাদের আর্থিক সহযোগিতা করলে ঘুরে দাড়াতে পারতাম।

মাহবুব জানান, আমার প্রায় ১ বিঘা জমিতে পান বরজ রয়েছে সম্পূর্ণ ডুবে গেছে। আনুমানিক ৪ থেকে ৫ লক্ষ টাকার লোকেশান হয়েছে। কোনো কাজ কর্ম নেই ধারদেনা দোকান বাকী করে জীবনধারণ করেছি। বন্যায় কেড়ে নিয়েছে জীবনধারণ করার অবলম্বন।

আবুল কালাম জানান, আমার পুরো পরিবার চলে পান বরজে উপর ১ টি সম্পূর্ণ ডুবেছে আরেকটি আংশিক ডুবেছে দুই, তিন দিনের মাঝে ডুবে যাবে চারদিকে পলিথিন ও মাটি দিয়ে বাঁধ দিয়েছে দিন-রাত পানি সেঁচে বের করে চলেছি। অন্য কোনো ফসল নেই আমাদের। অর্থ কষ্ট, খাদ্য কষ্টে, অনেক কঠিন সময় পার করছি। আকর্শিক বন্যায় মাঠের পাকা ধান ও তুলতে পারিনি। খড় নেই লতাপাতা খাওয়াচ্ছি গরুকে। আমাদের এই অসহায় অবস্থায় কেউ পাশে নেই।

এ বিষয়ে রাজশাহী পানি উন্নয়ন বোর্ড (পাউবো)-এর উপ-সহকারী প্রকৌশলী মোঃ আব্দুল হামিদ বলেন, অতিরিক্ত বৃষ্টিপাতের ফলে বরোনায় নদীর পানি প্রবাহ বৃদ্ধি পেয়ে কিছু এলাকা প্লাবিত হয়েছে। নদীটির পানি প্রবাহের সর্বোচ্চ সিমা রয়েছে ১৩ দশমিক ৯৬ মিটার বর্তমানে প্রবাহিত হচ্ছে ২৭ সেন্টিমিটার নিচ দিয়ে। এখনো বিপদসীমা অতিক্রম হয়নি। তবে আরো বৃষ্টিপাত হলে বন্যা সৃষ্টি হতে পারে।

এ বিষয়ে দুর্গাপুর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা সাহানা পারভীন লাবণী জানান, অতিবৃষ্টি, ও বরোনায় নদীর পানিতে জলবদ্ধতার সৃষ্টি হয়েছে। এতে কিছু পান বরজ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে, তাদের পরামর্শ এবং দিকনির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। পানি কমলে কৃষক পরিচর্যার মাধ্যমে ক্ষতি পুসিয়ে উঠতে পারবেন।

spot_img
spot_img

জনপ্রিয় সংবাদ

spot_img
spot_img

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে
Captcha verification failed!
ক্যাপচা ব্যবহারকারীর স্কোর ব্যর্থ হয়েছে। আমাদের সাথে যোগাযোগ করুন!
error: Content is protected !!