সিনিয়র প্রতিবেদক :
ঢাকার দোহার উপজেলার সুতারপাড়া ইউনিয়নের কাজিরচর এলাকায় মধ্যযুগীয় বর্বরতায় তালাককৃত স্ত্রীরির নির্যাতনে দুটি চোখ হারিয়েছেন মধুরচরের স্বামী কালাম মোল্লা (৪৫)। এই ঘটনায় তালাককৃত স্ত্রী হেনা আক্তার (৪৫) ও লোকমান (৫০) নামে দুইজনকে গ্রেপ্তার করেছে দোহার থানা পুলিশ।
পুলিশ ও মামলা সূত্রে জানা যায়, মধুরচরের আব্দুর রাজ্জাক মোল্লার ছেলে কালাম মোল্লার সাথে ২৫ বছর আগে বিয়ে হয় সুতারপাড়া ইউনিয়ন মহিলা আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক কাজিরচর এলাকার হেনা আক্তার (৪২) এর সাথে। এরই মধ্যে দুই সন্তানের জনক হন কালাম দম্পতি। হেনার চলাফেরা হঠাৎ এলোমেলো দেখেন তার স্বামী কালাম। বেশিরভাগ সময় না বলে বাড়ির বাইরে যেত হেনা। এ নিয়ে তার স্বামী বাধা দিলে সংসারে কলহ সৃষ্টি হয়। পরে তিন বছর আগে হেনা হঠাৎ তালাক দেয় কালামকে। তালাকের পর থেকে মাঝে মাঝেই সন্তানদের দেখতে ও খোঁজ নিতে আসতো কালাম। যা হেনা সহ্য করতে পারতো না।
এর প্রেক্ষিতে গত বৃহস্পতিবার (৩ আগষ্ট) রাতে সন্তানদের দেখতে গেলে হেনার সাথে কথা কাটাকটি হয় কালামের। একপর্যায়ে হেনা ও তার ভাই লোকমান, মুক্তার, বোন রুনা আক্তার ও তার ভাবি আখি আক্তার কালামকে মুখে কাপড় দিয়ে বেধে বেধরক মারধর করে। এ সময় কালাম গুরুতর আহত হয়ে বাঁচার আকুতি জানায়। তাতেও ক্ষান্ত না হয়ে পানিতে চুন মিশিয়ে কালামের চোখে ও মুখে ঢেলে দেয় তারা।
এ ঘটনার পর স্থানীয়দের সহযোগিতায় গুরুতর আহত অবস্থায় কালাম মোল্লাকে উদ্ধার করে দোহার উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে প্রেরণ করেন।
আহত কালাম মোল্লার পরিবারের সদস্যরা ডাক্তারের বরাত দিয়ে জানান, কালামের দুটি চোখই নষ্ট হয়ে গেছে। ঘটনার পরদিন সকালে কালাম মোল্লার মা বাদী হয়ে ঘটনার সাথে জড়িত ৬ জন ও অজ্ঞাত আরও তিনজনের নামে দোহার থানায় একটি মামলা দায়ের করেন। যাহার মামলা নং-০৫।
এ বিষয়ে বক্তব্য নিতে আসামীদের বাড়িতে গেলে কাউকেই পাওয়া যায়নি। ঘটনার পর থেকে সবাই পলাতক রয়েছে বলে জানান প্রতিবেশীরা।
মামলার তদন্ত কর্মকর্তা এস আই সাইফুল ইসলাম জানান, এই ঘটনায় দুইজনকে গ্রেপ্তার করে একজনকে আদালতে প্রেরণ করা হয়েছে। আইনি প্রক্রিয়া শেষে আরেক অসামিকে আদালতে পাঠানো হবে। এছাড়াও বাকি আসামীদের গ্রেপ্তারের অভিযান অব্যাহত রয়েছে।