সিনিয়র প্রতিবেদক, বরিশাল :
বিগতদিনে অপরিকল্পিতভাবে সড়ক নির্মানের ফলে এবং ড্রেনেজ ব্যবস্থা না থাকার কারণে সড়কের ওপর বছরের প্রায় বারো মাসই জমে থাকে পানি। প্রথম দেখায় যেকারো মনে হবে, ভারী বৃষ্টি বা নদীর জোয়ারে সড়কটি পানিতে ডুবে রয়েছে। কিন্তু বাস্তবে প্রায় বারো মাসই সড়কটিতে পানি জমে থাকে।
এতে করে সাধারণ মানুষের পায়ে হেঁটে চলাচল করতে গিয়ে মারাত্মক সমস্যার সৃষ্টি হচ্ছে। তেমনি যানবাহন চলাচলের সময় পানি ছিটকে স্কুল-কলেজ পড়ুয়া শিক্ষার্থীসহ পথচারীদের পরিধিয় পোষাক ভিজে একাকার হয়ে যাচ্ছে। সড়কটির অবস্থান বরিশালের প্রথম শ্রেনীর গৌরনদী পৌরসভার এক নম্বর ওয়ার্ডের নীলখোলা থেকে টরকী বন্দরে আবাসিক এলাকার।
সরেজমিনে দেখা গেছে, সড়কের আশপাশে রয়েছে পাঁচটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, চারটি মসজিদ, তিনটি মন্দির, একটি ডায়াগনস্টিক সেন্টার, একটি কমিউনিটি সেন্টার। এছাড়া বিভিন্ন ধরনের ব্যবসা প্রতিষ্ঠানসহ ছোট-বড় প্রায় শতাধিক বাড়ি রয়েছে। ওই সড়কটি ব্যবহার করে প্রতিদিন টরকী বন্দরে যাতায়াত করছেন কয়েক হাজার মানুষ। দীর্ঘদিন থেকে তাদের সীমাহিন দুর্ভোগ পোহাতে হলেও বিষয়টি দেখার যেন কেউ নেই।
আরও সংবাদ পড়ুন : চিরকুট লিখে স্কুল ছাত্রীর আত্মহত্যা, অভিযুক্তের ফাঁসির দাবিতে মানববন্ধন
টরকী বন্দর ভিক্টোরিয়া মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের ছাত্রী ফাতেমা ইসলাম জানায়, সড়কটি নীলখোলা আনোয়ারা প্রি-ক্যাডেট স্কুল থেকে শুরু হয়ে টরকী বন্দর ভিক্টোরিয়া মাধ্যমিক বিদ্যালয়, টরকী বন্দর গার্লস স্কুল হয়ে টরকী বন্দর ছাগলহাট থেকে টরকী বন্দর বড় ব্রিজ পর্যন্ত চলে গেছে। সড়কটিতে বৃষ্টির পানি জমে থাকায় পায়ে হেঁটে চলাচল করতে তাদের চরম দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে।
ওই সড়কের ভ্যানচালক আব্দুল জব্বার বলেন, খুব সাবধানে গাড়ি চালাই, তারপরেও অনেক সময় পানি ছিটকে যায়। তখন পথচারীদের বকা-ঝকা শুনতে হয়। তিনি আরও বলেন, সড়কের পাশে পরিকল্পিত ড্রেনেজ ব্যবস্থা না থাকায় বৃষ্টির পানি কোথাও নামতে পারছেনা। পাশাপাশি সড়কের পাশ্ববর্তী স্থাপনাগুলো সড়ক থেকে উঁচু হওয়ার কারনেই সড়কের ওপর পানি জমে রয়েছে।
সরেজমিনে আরও দেখা গেছে, ওই সড়কের সামনে অবস্থিত ডেনমার্ক প্রবাসী ও সরকারি গৌরনদী কলেজ ছাত্র সংসদের সাবেক ভিপি মনিরুজ্জামান স্বপন ওরফে ভিপি স্বপনের বসত বাড়ির পাশ দিয়ে পানি নিস্কাশনের জন্য থাকা ড্রেনের উত্তর পাশের মুখ আটকে দিয়েছে স্থানীয় বসবাসরতরা।
পানি নিস্কাশনের ড্রেনের পাশাপাশি চলাচলের রাস্তায়ও দেয়াল নির্মান করে বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। যেকারণে ওই ড্রেন দিয়ে পানি নিস্কাশনে যেমন বাঁধাগ্রস্থ হয়ে ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে, তেমনি নিজেদের জমি দাবি করে চলাচলের রাস্তা বন্ধ করে দেয়ায় ভোগান্তিতে পরেছে অপর বাসিন্দারা।
স্থানীয় একাধিক বাসিন্দারা অভিযোগ করে বলেন, বিগত পতিত সরকারের সময় বিনাভোটে টানা তিনবারের গৌরনদী পৌরসভার মেয়র ও উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক হারিছুর রহমান হারিছ তার ইচ্ছেমতো অপরিকল্পিতভাবে সড়ক নির্মান, তার নিজস্ব ক্যাডার বাহিনীর সুবিধার্থে পূর্বের ড্রেনেজ ব্যবস্থা বন্ধ করে দেয়াসহ চলাচলের পথে দেয়াল নির্মানের নির্দেশের কারণেই জলাবদ্ধতার স্বীকার হচ্ছে পৌরসভার এক নম্বর ওয়ার্ডবাসী।
এ ব্যাপারে পৌর প্রশাসক ও উপজেলা নির্বাহী অফিসার রিফাত আরা মৌরি বলেন, বিষয়টি আমার জানা ছিলোনা। ইতোমধ্যে পৌরসভার প্রকৌশলীকে বিষয়টি অবহিত করে সরেজমিন পরিদর্শনের মাধ্যমে দ্রুত প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।