সিনিয়র প্রতিবেদক :
ঢাকার নবাবগঞ্জে চাঞ্চল্যকর অটোরিকশা চালক শাহ আলম হত্যাকান্ডের মামলায় ষড়যন্ত্রমূলকভাবে ফাঁসানোর প্রতিবাদে সংবাদ সম্মেলন করেছেন ভুক্তভোগী পরিবার। শুক্রবার (২৩ মে) দুপুরে ভুক্তভোগিরা উপজেলার বক্সনগর এলাকায় তার এক আত্মীয় বাড়িতে স্থানীয় সাংবাদিদের ডেকে এ সংবাদ সম্মেলন করেন।
সংবাদ সম্মেলনে ভুক্তভোগী পরিবার বলেন, পূর্ব শত্রুতা জেরে একটি চক্র নিজের স্বার্থ হাসিলের জন্য এ হত্যাকান্ডকে হাতিয়ার হিসেবে বেছে নিয়েছে। বাহ্রা গ্রাম নিবাসী সুমন ওরফে সম্রাট ও রাশেদ এ হত্যাকান্ডের সাথে জড়িত থাকতে পারে। তারাই শাহ আলমকে গুম করে হত্যা করে আমাদের পরিবারের উপর দায় চাপানোর চেস্টা করছেন। শাহ আলম ভাই গুম হওয়ার দিন থেকে তার লাশ উদ্ধার এবং এর পরবর্তী দিনগুলোতে তাদের দুইজনের চালচলন খুবই সন্দেহজনক ছিলো।
ভুক্তভোগীর বোন শাহনাজ দাবী করেন, শাহ আলম নিখোঁজের ৭দিন আগে ২৫ মার্চ সুমন ওরফে সম্রাট বাদি হয়ে আমার ভাই মোক্তার, রাহাত, রাতুল ও আন্নেস ও আমলেছসহ আরও কয়েকজনের নামে আদালতে তাকে হত্যা করে গুমের হুমকির অভিযোগ তুলে মামলা করেন। অথচ হুমকির এমন অভিযোগ সম্পূর্ণ মিথ্যা। পরবর্তীতে দেখা যায়, শাহ আলম হত্যা মামলায় ঐ মামলার বিবাদীদেরকেই আসাামী করা হয়েছে এবং নামের সিরিয়ালে একই রাখা হয়েছে। এতেই প্রতীয়মান হয় সুমন পরিকল্পিতভাবে আগেই আদালতে একটি মামলা করে রেখেছে যাতে শাহ আলমকে পরবর্তীতে হত্যা করে আমাদের পরিবারের উপর চাপিয়ে দিতে পারে। আরেক সন্দেহভাজন রাশেদই প্রথম খারশুরে শাহ আলমের লাশের সন্ধান পান। আমাদের মনে এটা নিয়ে সন্দেহ তৈরি হয়েছে। রাশেদ কিভাবে জানলো লাশ খারশুরে রয়েছে।
লিখিত বক্তব্যে তারা আরও বলেন, পুলিশ লাশ সুরতহাল করার আগেই সুমন ওরফে সম্রাট ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়ে বর্ণনা করছিলেন কিভাবে শাহ আলমকে হত্যা করা হয়েছে। আমরা ধারনা করছি, হত্যার সাথে সুমন জড়িত থাকায় তিনি বর্ণনা দিতে পেরেছে। এছাড়া সুমন ও রাশেদ মৃত শাহ আলমের নিকটাত্মীয় না হলেও হত্যাকান্ড নিয়ে তারা খুবই উৎসাহিত। যা এলাকার অনেকের চোখে রহস্যজনক মনে হয়েছে।
তারা বলেন, মিথ্যা মামলা হওয়ার পর আমরা মানবেতর জীবনযাপন করছি। এছাড়াও হেনস্তা হচ্ছি সামাজিক ভাবে। আশা করি পুলিশের সঠিক তদন্তের মাধ্যমে হত্যার প্রকৃত রহস্য উদঘাটন হবে। আমরাও চাই শাহ আলম হত্যার সাথে যারা জড়িত তাদের আইনের আওতায় এনে বিচার করা হোক। তবে কোন নিরপরাধ ব্যক্তি যেন মিথ্যা মামলা হয়রানি না হয় সে ব্যাপারে আপনাদের মাধ্যমে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর প্রতি আমাদের বিশেষ অনুরোধ রহিল।
জানা যায়, গত ৬ এপ্রিল মুন্সিগঞ্জের সিরাজদিখান উপজেলার খারশুর এলাকা থেকে শাহ আলম নামে এক অটোরিকশা চালকের লাশ উদ্ধার করা হয়েছে। ২ এপ্রিল নিজ বাড়ি ঢাকার নবাবগঞ্জ উপজেলার বাহ্রা গ্রাম থেকে অটোরিকশা নিয়ে বের হওয়ার পর তিনি নিখোঁজ হন। নিখোঁজের ৪ দিন পর ৬ এপ্রিল তার মরদেহ পাওয়া যায় খারশুর এলাকায়। পরবর্তীতে এঘটনায় সিরাজদিখান থানায় শাহ আলমের ছেলে বাদী হয়ে মামলাও করেন। মামলায় মুক্তার, রাহাত, রাতুল, আন্নেস ও আমলেছগংদের নাম জড়ানো হয়েছে।
এ সময় সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন, মামলার আসামী মুক্তারের স্ত্রী আনোয়ারা, বোন শাহনাজ বেগম ও ডালিয়া আক্তার, আনেসের স্ত্রী ও রাহতের মা হেনা বেগম, রাহাতের স্ত্রী ফাতেমাসহ পরিবার অন্যান্য সদস্যরা।