23 C
Dhaka
শুক্রবার, এপ্রিল ১১, ২০২৫

দোহারের পদ্মায় মহোৎসবে চলছে বালু লুট

spot_img

আরো সংবাদ

spot_img
spot_img

সিনিয়র প্রতিবেদক :
ঢাকার দোহার উপজেলার পদ্মা নদীতে রাত হলেই প্রায় ৭ থেকে ৮টি কাটার দিয়ে মহোৎসবে চলছে অবৈধভাবে বালু উত্তোলন। এতে চরম ক্ষতিগ্রস্থের শঙ্কায় মেঘুলা, নারিশা, মুকুসুদপুর এলাকার বেড়িবাধ। ফলে আতঙ্কে রয়েছে পদ্মাপারের হাজারও বাসিন্দা।

স্থানীয়রা জানান, ঢাকা জেলা আওয়ামী স্বেচ্ছাসেবক লীগের সহ-সভাপতি চঞ্চল মোল্লা ও মাসুদ মোল্লাসহ আরও বেশ কয়েকজনের নেতৃত্বে চলছে এই বালু উত্তোলন। এ বিষয়ে প্রশাসনের হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন পদ্মাপারের মানুষ।

সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, দিনের বেলায় মেঘুলার পদ্মার তীরবর্তী নিরাপদ এলাকায় রাখা হয় বালু উত্তোলনের কাটার। এছাড়া শ্রীনগরের সীমানার তীরেও দুটি কাটার রাখা হয়। যেগুলো রাত হলেই প্রবেশ করে দোহারের সীমানায়। রাত ১১ টার পর থেকে ভোর রাত পর্যন্ত উত্তোলন করা হয় বালু।

খোঁজ নিয়ে আরও জানা যায়, নারিশা ও মুকসুদপুর পদ্মা তীর রক্ষা বাঁধ বরাবর এলাকায় প্রতিরাতেই বালু উত্তোলন করা হয়। এ সব বালু বাল্কহেডে করে দোহারসহ দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে বিক্রি করছে প্রভাবশালী চক্র। চাহিদা বেশি হওয়ায় প্রভাবশালী মহলটি বালু বিক্রি করে কোটি কোটি টাকা হাতিয়ে নিচ্ছে। দোহারে একটি নৌ পুলিশ ফাঁড়ি থাকলেও এর ১০ কিলোমিটারের মধ্যে চলে বালু উত্তোলনের মহোৎসব। ফাঁড়িটির নীরব ভূমিকা নিয়েও প্রশ্ন তুলেছেন অনেকে।

মুকসুদপুরের পদ্মাপারের বাসিন্দা রবিউল হোসেন জানান, রাত হলেই ড্রেজারের মাটি কাটার শব্দে ঘুম ভাঙ্গে। তিনি বলেন, বিগত সরকারের আমলে যারা পদ্মায় বালু কেটেছে তারাই মিলে মিশে আবার শুরু করেছেন। তাহলে এদেশে আন্দোলন করে কি লাভ হলো।

মেঘুলা এলাকার ৫৫ বছরের এক বৃদ্ধ সবিরন বিবি বলেন, মাটি কাটার শব্দে ঘরে থাকা যায়না। এই পদ্মা এক সময় কি ছিলো, আর এখন মাটি কাটার কারনে কি হইয়া গেছে। তিনি আকুতি জানিয়ে বলেন, বাবা তোমরা কিছু করো, আমরাতো ভয়ে বলতে পারিনা।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক নারিশা পদ্মাপারের বাসিন্দা পদ্মা সরকারি কলেজের একাদশ শ্রেণীর এক ছাত্রী বলেন, আমাদের পদ্মার বাধ ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে আওয়ামী লীগ সরকারের কিছু বালু ব্যবসায়ীদের কারনে। গত বছরের ৫ আগষ্টের পর কয়েকমাস বন্ধ ছিলো বালু উত্তোলন। এখন আবার শুরু করেছে। উপজেলা প্রশাসন ও নৌ-পুলিশ থাকাকালীন কিভাবে বালু কাটা হয়।

তিনি আরও বলেন, এখনই যদি ব্যবস্থা না নেয়া হয় তাহলে দোহারের মানচিত্র একদিন বিলীন হয়ে যাবে।

এদিকে স্থানীয় ও জাতীয় সংবাদ মাধ্যমে বিভিন্ন সময়ে এনিয়ে সংবাদ প্রকাশের পরেও প্রশাসনের নিরব ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন তোলেন অনেকে।

এ বিষয়ে জানতে অভিযুক্ত চঞ্চল মোল্লা মোল্লার মোবাইলে একাধিক ফোন দিলে তার মোবাইলটি বন্ধ পাওয়া যায়। পরে দোহারের তীরবর্তী অপর দুটি ড্রেজারের দায়িত্বে থাকা ব্যক্তিদের বক্তব্য নিতে গেলে ড্রেজারের ভেতরে থাকা শ্রমিকরা সাংবাদিকদের উপস্থিতি দেখে দৌড়ে পালিয়ে যায়।

এ ঘটনায় চর মাহমুদপুর নৌ-পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ মোঃ নূর-আলম বলেন, পদ্মায় বালু উত্তোলনের বিষয়ে তিনি কিছুই জানেন না। সত্যতা পেলে শীঘ্রই নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট ও সেনাবাহিনীর সহায়তা নিয়ে অভিযান করা হবে।

এ বিষয়ে দোহার উপজেলা সহকারি কমিশনার (ভূমি) তাসফিক সিগবাদ উল্লাহ বলেন, বিষয়টি জানা ছিলো না। পদ্মায় যারা অবৈধ ভাবে কাটার দিয়ে বালু উত্তোলন করবে তাদের বিরুদ্ধে শীঘ্রই আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে।

spot_img
spot_img

জনপ্রিয় সংবাদ

spot_img
spot_img

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে
Captcha verification failed!
ক্যাপচা ব্যবহারকারীর স্কোর ব্যর্থ হয়েছে। আমাদের সাথে যোগাযোগ করুন!
error: Content is protected !!