দানিচ খান জুয়েল :
গাজা উপত্যকায় ফিলিস্তিনি জনগণের বিরুদ্ধে রক্তাক্ত এবং অব্যাহত ইসরায়েলি আগ্রাসন মোকাবেলায় ওআইসির নির্বাহী কমিটির মন্ত্রী পর্যায়ের এক জরুরি বৈঠকে বাংলাদেশ তীব্র নিন্দা জানিয়েছে ও ক্ষোভ প্রকাশ করেছে। জেদ্দায় বুধবার (১৮ অক্টোবর) ওআইসির সদর দপ্তরে মন্ত্রী পর্যায়ের এ বৈঠকে যোগ দিয়েছেন বাংলাদেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. আব্দুল মোমেন।
এ সময় পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. আব্দুল মোমেন বলেন, আমরা অধিকৃত ফিলিস্তিনি ভূখন্ডে ইসরায়েলি আগ্রাসনের তীব্র নিন্দা জানাই যার ফলে ৩ হাজার জনেরও বেশি ফিলিস্তিনি নাগরিক প্রাণ হারিয়েছে, যাদের মধ্যে এক তৃতীয়াংশ শিশু। সৌদি আরবের উদ্যোগে ওআইসি এর সদস্য রাষ্ট্রসমূহের পররাষ্ট্রমন্ত্রীগণ এ জরুরি বৈঠকে যোগ দেন।
পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. আব্দুল মোমেন আরও বলেন, গাজার হাসপাতালে ইসরায়েলের বর্বরোচিত বোমা হামলা সম্পূর্ণরূপে অগ্রহণযোগ্য। বেসামরিক লোকদের লক্ষ্য করে গাজায় ইসরায়েলের দ্বারা পরিচালিত এ অসামঞ্জস্যপূর্ণ যুদ্ধ মানবাধিকার এবং মানবিক আইনের সমস্ত মৌলিক নীতির লঙ্ঘন করেছে। তাই আমরা সকল পক্ষের মধ্যে আলাপ-আলোচনার মাধ্যমে গাজায় জরুরী যুদ্ধবিরতির আহবান জানাই।
মোমেন বলেন, গাজায় ইসরায়েলের মানবিক প্রবেশাধিকার প্রত্যাখ্যান এবং বেসামরিক অবকাঠামোতে নির্বিচারে হামলার কারণে গাজার মানবিক পরিস্থিতি সর্বকালের সর্বনিম্ন পর্যায়ে পৌঁছেছে। আমরা দ্ব্যর্থহীনভাবে ফিলিস্তিনিদেরকে তাদের নিজস্ব মাতৃভূমি থেকে জোরপূর্বক বাস্তুচ্যুত করার জন্য ইসরায়েলের আহবানকে প্রত্যাখ্যান করি- যা সমগ্র অঞ্চলে মানবিক পরিস্থিতির আরও অবনতি ঘটাবে।
তিনি জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদকে গাজায় জাতিসংঘ এবং অন্যান্য সহযোগী কর্মী, স্বাস্থ্যকর্মী এবং সাংবাদিকদের হত্যার নিন্দা এবং যুদ্ধাপরাধ এবং আন্তর্জাতিক মানবিক ও মানবাধিকার আইনের প্রতি অসম্মানের জন্য ইসরায়েলকে জবাবদিহি করার আহবান জানান।
পররাষ্ট্রমন্ত্রী পর্যায়ের ওআইসি এর এই জরুরি বৈঠকে বিভিন্ন মুসলিম রাষ্টের পররাষ্ট্রমন্ত্রীগন যোগদান করে ফিলিস্তিনের জনগনের সাথে তাঁদের সংহতি প্রকাশ করেন ও ইসরালের অব্যহত আগ্রাসনের তীব্র নিন্দা জানান। এ সময় বৈঠকের শুরুতেই সৌদি পররাষ্ট্রমন্ত্রী প্রিন্স ফয়সাল বিন ফারহান সবাইকে স্বাগত জানিয়ে ফিলিস্তিন সমস্যা সমাধান ও ফিলিস্তিনিদের জন্য মানবিক সহায়তার আহবান জানান। ফিলিস্তিনের পররাষ্ট্রমন্ত্রী চলমান সংঘাতের সর্বশেষ পরিস্থিতি সবাইকে জানান। সভা শেষে একটি যৌথ ঘোঘণাপত্র সর্বসম্মতিক্রম্র গৃহীত হয়।
বাংলাদেশের পক্ষে পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. আব্দুল মোমেন ছাড়াও সৌদি আরবে বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত ড. মোহাম্মাদ জাবেদ পাটোয়ারি ও জেদ্দাস্থ বাংলাদেশের কনসাল জেনারেল মোহাম্মাদ নাজমুল হক উপস্থিত ছিলেন।