সিনিয়র প্রতিবেদক :
ঢাকার কেরাণীগঞ্জে র্যাব-১০ এর অভিযানে চেতনানাশক ঔষধ মেশানো বিস্কুট খাইয়ে অজ্ঞান করে ইজিবাইক ছিনতাইকারী চক্রের মূলহুতা ও নারীসহ সক্রিয় ৬ সদস্যকে গ্রেপ্তার করেছে র্যাব-১০। মঙ্গলবার (৪ জুলাই) ঢাকার দক্ষিণ কেরাণীগঞ্জ, গোপালগঞ্জের কাশিয়ানি ও মাদারীপুরের শিবচর এলাকা থেকে তাদের গ্রেপ্তার করা হয়। বুধবার (৫ জুলাই) দুপুরে এক প্রেস কনফারেন্সের মাধ্যমে এ তথ্য জানায় র্যাব-১০।
গ্রেপ্তারকৃতরা হলেন, পটুয়াখালী জেলার অজ্ঞান পাটির মূলহুতা মোঃ শফিকুল ইসলাম (৪৫)সহ, নুর ইসলাম (৩২), মোঃ আব্দুর রহমান (২৭), মোছাঃ শীমা আক্তার (২৮), খুলনা জেলার গোলাম রাব্বি (২৫) ও মাদারীপুরের শিবচরের শাহনাজ (৩৭)।
প্রেস কনফারেন্স সূত্রে জানা যায়, গত মঙ্গলবার (২৭ জুন) ঢাকার দক্ষিণ কেরাণীঞ্জের হাসনাবাদ এলাকা থেকে মোঃ ফিরোজ (২২) নামক এক ইজিবাইক চালক প্রতিদিনের ন্যায় জিবিকা নির্বাহের জন্য ইজিবাইক নিয়ে বের হয়। আনুমানিক বিকেল ৫টার দিকে তার পরিবারের লোকজন ফিরোজ এর সাথে যোগাযোগ করতে না পেরে তাকে বিভিন্ন জায়গায় খোজাখুঁজি করতে থাকে। পরে কোথায় তার কোন সন্ধান না পাওয়ায় ফিরোজের বাবা কিবরিয়া গাজী গত বুধবার (২৮ জুন) দক্ষিণ কেরাণীগঞ্জ থানায় একটি সাধারণ ডায়রী করেন। যার জিডি নং- ১৬৬৯ ও তারিখ ২৮/০৬/২০২৩ইং।
র্যাব জানায়, ঘটনাটি আমরা জানতে পেরে র্যাব-১০ এর একটি আভিযানিক দল নিখোজ ইজিবাইজ চালক ফিরোজ’কে উদ্ধার করতে গোয়েন্দা নজরদারি বৃদ্ধি ও ছায়া তদন্ত শুরু করে তথ্য প্রযুক্তির সহায়তা ও গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে মঙ্গলবার (৪ জুলাই) ঢাকার দক্ষিণ কেরাণীগঞ্জ, গোপালগঞ্জের কাশিয়ানি ও মাদারীপুরের শিবচরের বিভিন্ন এলাকায় অভিযান পরিচালনা করে তাদের ছয়জনকে গ্রেপ্তার করা হয়।
র্যাব আরও জানায়, গ্রেপ্তার কালে তাদের কাছে থেকে ছিনতাই কাজে ব্যবহৃত চেতনানাশক মিশ্রিত বিস্কুট, চেতনানাশক ঔষধ, ভিকটিম ফিরোজ এর মোবাইল ফোন ও ০১টি চোরাইকৃত সিএনজি উদ্ধার করা হয়।
র্যাব-১০ বলেন, প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে শফিকুল, নুর ইসলাম, গোলাম রাব্বি, আব্দুর রহমান, শীমা আক্তার ও শাহনাজ ইজিবাইক ছিনতাই করার উদ্দেশ্যে ঢাকার দক্ষিণ কেরাণীগঞ্জের হাসনাবাদ এলাকায় অবস্থান করে। পরে নুর ইসলাম, গোলাম রাব্বি, শীমা ও শাহনাজ হাসনাবাদ গরু হাটে যাওয়ার উদ্দেশ্যে ভিকটিম ফিরোজ এর ইজিবাইক ভাড়া করে। গরুর হাটে যাওয়ার পর নুর ইসলাম ও গোলাম রাব্বি’কে ইজিবাইক চালক ভিকটিম ফিরোজের সাথে চা বিস্কুট খাওয়ার কথা বলে শীমা ও শাহনাজ গরু হাটে চলে যায়।
এ সময় নুর ইসলাম ও গোলাম রাব্বি তাদের কাছে থাকা চেতনানাশক ঔষধ মেশানো বিস্কুট এর অনুরুপ এক প্যাকেট বিস্কুট নিকস্থ চায়ের দোকান থেকে ক্রয় করে। পরবর্তীতে তারা কৌশলে উক্ত বিস্কুটের প্যাকেটটি পরিবর্তন করে চেতনানাশক ঔষধ মেশানো বিস্কুট ইজিবাইক চালক ফিরোজ’কে খাওয়ানো হলে কিছুক্ষণ পর ইজিবাইক চালক অচেতন হলে তাকে কেরাণীগঞ্জের কাউটাইল এলাকায় ফেলে দিয়ে ইজিবাইক নিয়ে পালিয়ে যায়।
গ্রেপ্তারকৃতদের বিরুদ্ধে মাদক, চুরি, অসাধুভাবে চোরাই মালামাল বেচাকেনাসহ বেশ কয়েকটি মামলা রয়েছে বলে জানা যায়।