সিনিয়র প্রতিবেদক :
ঢাকার দোহার উপজেলায় একটি বিচারে শালিসিদের উপর হামলার ঘটনা ঘটেছে। সোমবার (১২ জুন) বিকেলে উপজেলার নারিশা আম্বুর দোকান এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।
প্রত্যক্ষদর্শী সূত্রে জানা যায়, উপজেলার নারিশা আম্বুর দোকান এলাকায় আবুল কাশেম ওরফে কাশি ও তার আপন ভাতিজা ওয়াজ উদ্দিনের সাথে গাছ কাটা নিয়ে সমস্যার সমাধানে পাশের একটি বাড়িতে শালিসি বসে স্থানীয় গণমান্য ব্যক্তিবর্গরা।
এ সময় শালিসিতে প্রধান বিচারক হিসেবে উপস্থিত থাকেন দোহার উপজেলা যুদ্ধকালীন কমান্ডার বীর মুক্তিযোদ্ধা রজ্জব মোল্লাসহ স্থানীয় মুরব্বিগণ। সে সময় কাশির পক্ষ নিয়ে শালিসিতে আসে স্থানীয় সম্রাট মোল্লাসহ তার কিশোর গ্যাং। বিচার চলাকালীন এক পর্যায়ে রজ্জব মোল্লার সাথে কথা কাটাকাটি হয় সম্রাট মোল্লার সাথে। পরে উগ্র মেজাজে রজ্জব মোল্লার সাথে বাগবিতন্ডতা করে খারাপ আচরনও করেন সম্রাট। এ সময় পরিবেশ উৎত্তেজিত হলে এক পর্যায়ে বিচার ছেড়ে চলে যান রজ্জব মোল্লা।
এ সময় বিচারে দোহার প্রেসক্লাবের সাধারণ সম্পাদক সাংবাদিক আতাউর রহমান সানিও ওই বিচারে উপস্থিত ছিলেন। সম্রাট মোল্লা ও তার কিশোর গ্যাং এর লোকজন সাংবাদিক আতাউর রহমান সানির হাতে থাকা মোবাইল ফোনটি ছিনিয়ে নিলে তাৎক্ষনিক পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রনের বাহিরে চলে যায়। সে সময় ওয়াজ উদ্দিনের আরেক চাচাতো ভাই সাপ্তাহিক নববাংলা পত্রিকার প্রকাশক বিল্লাল হোসেন সাংবাদিক আতাউর রহমান সানিকে রক্ষা করতে এলে তার উপর হামলা করে সম্রাট ও তার সন্ত্রাসী বাহিনী।
এ সময় বিল্লাল হোসেনকে রক্ষা করতে তার মা ও চাচাতো ভাই ফারুক এগিয়ে এলে তাদের উপরও চড়াও হয়ে তাদেরকে মেরে রক্তাক্ত করে আহত করে সম্রাট বাহিনী।
জানা যায়, ঘটনার সময় দোহার থানার সদস্য এসআই দেলোয়ার হোসেন উপস্থিত থাকলেও তিনি নিরব ভূমিকা পালন করেন। পরে উর্ধতন অফিসারের নির্দেশে সাংবাদিকের মোবাইল ফোনটি উদ্ধার করে দেন তিনি।
এ বিষয়ে আহত বিল্লাল হোসেন বলেন, আমার চাচা কাশির সাথে আব্দুল মান্নার চাচার ছেলে ওয়াজ উদ্দিনের সাথে গাছ কাটার বিষয় নিয়ে আজকে বিচার হচ্ছিলো। হঠাৎ বিচারের শেষ দিকে সম্রাট রজ্জব মোল্লার উপর চড়াও হয়ে উঠলে পরিস্থিতি একটু গরম হয়ে পরে। রজ্জব মোল্লা চলে যাওয়ার পরেই সম্রাটের সন্ত্রাসী বাহিনী হঠাৎ করে সাংবাদিক আতাউর সানির হাতে থাকা মোবাইল ফোনটি ছিনিয়ে নিয়ে তার উপর হামলার চেষ্টা করে। পরে আমি পরিস্থিতি শান্ত করতে গেলে আমার উপরও হামলা করে আমাকে রক্তাক্ত করে ফলে ওরা। এমনকি আমার বৃদ্ধ মা ও চাচাতো ভাই ফারুক এগিয়ে এলে তাদের উপরও হামলা করে রক্তাক্ত করে ফেলে । বিচারে আমিও একজন বিচারক হিসেবেই উপস্থিত ছিলাম।
এ বিষয়ে ঘটনাস্থলে উপস্থিত এসআই দেলোয়ার জানান, অভিযোগটা আমার কাছে ছিলো। তারা স্থানীয়ভাবে বসে বিষয়টা মিমাংসা করবে বলে আমাকে ফোন দিলে আমি সেখানে যাই। বিচারের সিদ্ধান্ত সম্রাট মোল্লা না মেনে রজ্জব মোল্লার সাথে বেয়াদবি করে। তখন রজ্জব মোল্লা চলে যায়। সেখানে সাংবাদিক সানি ভাই মোবাইল হাতে নিলে সম্রাটের লোকজন তার উপর ও বিল্লাল হোসেনের উপর অতর্কিত ভাবে হামলা চালায়। আমি ফেরানোর চেষ্টা করেছি। আমি একা ছিলাম। সাংবাদিক সানি ভাইর কিছু হয়নি, তাকে সেভ করা হয়েছে কিন্তু বিল্লাল হোসেন আহত হয়েছে। সম্রাট একটি বেয়াদব ছেলে। পরে আমি সাংবাদিককে ফোনটি উদ্ধার করে দিয়েছি।
বীর মুক্তিযোদ্ধা রজ্জব মোল্লার বলেন, সম্রাট মোল্লা এলাকার একজন চিহ্নিত সন্ত্রাসী। ওর সন্ত্রাসী কর্মকান্ডে অতিষ্ঠ এলাকাবাসী। আজকে ছোট একটা ঘটনা নিয়ে পক্ষ পাতিত্ব করে হামলা ও মারধর করেছে সে। এ ঘটনায় সম্রাটের উপযুক্ত শাস্তি হওয়া প্রয়োজন।
অভিযুক্ত সম্রাট সাথে মুঠোফোনে যোগাযোগ করার চেষ্টা করা হলেও তাকে পাওয়া যায়নি।
দোহার থানার ওসি তদন্ত আজহারুল ইসলাম বলেন, এবিষয়ে লিখিত অভিযোগ পেয়েছি। পরবর্তী আইনানুগ ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন।