23 C
Dhaka
শুক্রবার, এপ্রিল ১১, ২০২৫

দোহারের ঐতিহ্যবাহী বিদ্যাপীঠ “কার্তিকপুর উচ্চ বিদ্যালয়” শিক্ষার আলো ছড়াচ্ছে ঘরে ঘরে

spot_img

আরো সংবাদ

spot_img
spot_img

সুজন খান :
পারিবারিক শিক্ষার পর যদি কোন জায়গা বা কোন প্রতিষ্ঠান থাকে তা হচ্ছে স্কুল-কলেজ বা শিক্ষা প্রতিষ্ঠান। আর এই শিক্ষা প্রতিষ্ঠান থেকে শিক্ষা অর্জন করে মানুষ নিজেকে সুশিক্ষায় শিক্ষিত করে নিজে প্রতিষ্ঠিত হয় এবং পাশাপাশি দেশে, সমাজ ও পরিবারকে আলোকিত করে। আর এই আলোকিত করার পেছনে রয়েছে সেই স্কুল শিক্ষক বা শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, পরিবেশ, অবকাঠামো ও নিয়ম-শৃংখলা ইত্যাদি। এমনই এক শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ঢাকার দোহার উপজেলার কুসুমহাটি ইউনিয়নের সুনামধন্য ঐতিহ্যবাহী বিদ্যাপীঠ “কার্তিকপুর উচ্চ বিদ্যালয়”। যা প্রায় সাড়ে চার যুগ ধরে অত্যন্ত সুনামের সাথে ঘরে ঘরে শিক্ষার্থীদের মাঝে শিক্ষার আলো ছড়াচ্ছে।

ঐতিহ্যবাহী বিদ্যাপীঠ “কার্তিকপুর উচ্চ বিদ্যালয়” যা স্থাপিত হয়েছে ১৯৬৮ সালে। ততকালে স্কুলটি স্থানীয় গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গের আর্থিক সহযোগিতায় শিক্ষা প্রতিষ্ঠানটি প্রতিষ্ঠিত হয়।

সে সময় বিদ্যালয় প্রতিষ্ঠাকালে মাত্র ৫০/৬০ জন ছাত্রছাত্রী নিয়ে শুরু করলেও বর্তমানে বিজ্ঞান, মানবিক ও ব্যবসায়ী শিক্ষা বিভাগসহ প্রায় সাড়ে ১৫ শত ছাত্রছাত্রী অধ্যায়নরত রয়েছে। প্রতি বছর এ বিদ্যালয় থেকে প্রায় ২০০ থেকে ২৫০ জন্য শিক্ষার্থী এসএসসি পরীক্ষায় অংশ গ্রহন করে ০৫-১০ জন্য শিক্ষার্থী সিজিপিএ ৫+ সহ প্রায় ৮৫/৯০ ভাগ শিক্ষার্থী উত্তীর্ণ হয়।

ইতিমধ্যে অত্র বিদ্যালয় থেকে পাশ করে বের হয়ে উন্নত শিক্ষা গ্রহণ করে কেউ হাইকোর্টের জজ ব্যারিষ্টার, কেউ ইঞ্জিনিয়ার, কেউ ডাক্তার, কেউ পুলিশ, র‌্যাব, কেউ ব্যাংকার, কেউ আবার সফলতার সঙ্গে রাজনীতি করছেন। বর্তমানে বিদ্যালয়ে রয়েছেন ১১ জন ম্যানেজিং কমিটির সদস্যবৃন্দ। যাদের মাধ্যমে অতি দক্ষতার সাথে বিদ্যালয়ের সকল সুভিধা-অসুভিধাসহ সকল কার্য্যক্রম পরিচালনা হয়ে আসছে। ম্যানেজিং কমিটির সভাপতির দায়িত্বে রয়েছেন সাবেক দোহার উপজেলা পরিষদের ভাইস চেয়ারম্যান ও উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারন সম্পাদক আলী আহসান খোকন শিকদার।

জানা যায়, সুনামধন্য এই বিদ্যাপীঠে ছাত্র-ছাত্রীদের ভালো লেখা-পড়ার পাশাপাশি শিক্ষা কার্যক্রমে বয়েজ স্কাউট, গার্লস স্কাউট, সাংস্কৃতিক প্রতিযোগিতা নিয়মিত পরিচালিত হয়ে আসছে। উপজেলা পর্যায়ে স্বাধীনতা দিবস, বিজয় দিবস, বিজ্ঞান মেলাসহ বিভিন্ন সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান ও খেলাধুলায় প্রতিযোগিতায় অংশ গ্রহণ করে শ্রেষ্ঠত্ব বজায় রাখার গৌরব অর্জন রয়েছে এই শিক্ষা প্রতিষ্ঠানটি।

আরও জানা গেছে, সুনামধন্য এই বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক ফারুক-ই-আজম একজন সৎ, দক্ষ ও বিনয়ী প্রধান শিক্ষক হিসেবে ইতি মধ্যেই বিদ্যালয়সহ বিভিন্ন মহলে সুনাম অর্জন করে অতি দক্ষতা ও সম্মানের সাথে দীর্ঘ ১৮ বছর যাবত কার্তিকপুর উচ্চ বিদ্যালয়ে প্রধান শিক্ষক হিসেবে দায়িত্ব পালন করে আসছেন। এছাড়াও প্রতিষ্ঠানটি থেকে জাতীয় শিক্ষা সপ্তাহ-২০২২‘এ দোহার উপজেলার মধ্যে উপজেলায় পর্যায়ে মাধ্যমিক ক্যাটাগরিতে শ্রেষ্ঠ প্রধান শিক্ষক হিসেবেও নির্বাচিত হয়েছেন।

বর্তমানে সুনামধন্য এই বিদ্যালয়টিতে ৩৮ জন শিক্ষক শিক্ষিকা ও কর্মচারী রয়েছেন। এর মধ্যে ১৩ জন এমপিওভূক্ত শিক্ষক রয়েছেন।

এই বিদ্যালয়ে রয়েছে ভাষা ও কম্পিউটার প্রশিক্ষণের জন্য শেখ রাসেল ডিজিটাল ল্যাব। আর এই ল্যাবে শিক্ষার্থীদের কম্পিউটার সম্বন্ধে ব্যসিক ও প্রাক্টিক্যাল শেখানো হয়।

বিদ্যালয়ের নবম শ্রেণীর ‘খ’ শাখার ছাত্রী পুষ্পিতা আক্তার মুন বলেন, দোহার উপজেলার মধ্যে যতগুলো বিদ্যালয় রয়েছে তার মধ্যে আমাদের এই কার্তিকপুর উচ্চ বিদ্যালয় একটি সুনামধন্য ঐতিহ্যবাহী বিদ্যালয়। এই বিদ্যালয়ে ভালো পড়া-লেখার পাশাপাশি সাংস্কৃতিক অঙ্গণ, খেলাধুলা ও বিভিন্ন দিবসে রয়েছে প্রথম স্থান অধিকার করার মত সাফল্যে অর্জন।

দশম শ্রেণীর ‘ক’ শাখার ছাত্র মাহমুদুল হাসান বলেন, আমাদের বিদ্যালয়ের সকল শিক্ষকদের সাথে রয়েছে আমাদের খুবই ভাল সু-সম্পর্ক। শিক্ষকরা আমাদের খবুই ভালোবাসেন এবং অত্যন্ত গুরুত্বের সাথে আমাদের পড়া-লেখা শেখানোর পাশাপাশি আমাদের পারিবারিক ভাবেও খোজঁ খবর নেন।

বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক ফারুক-ই-আজম বলেন, বিদ্যালয়টি উপজেলার মধ্যে একটি অন্যতম সুনামধন্য ঐতিহ্যবাহী বিদ্যালয়। এই বিদ্যালয়টি ১৯৬৮ সালে প্রতিষ্ঠার পর থেকে উপজেলার মধ্যে অন্যতম বিদ্যালয় হিসেবে খ্যাতি অর্জন করেছে। আমরা আমাদের সবটুকু দিয়ে আজীবন চেষ্টা করে যাবো সাফল্যের লক্ষে। আমাদের বিদ্যালয়কে উপজেলা পর্যায়ে শ্রেষ্ঠ শিক্ষা প্রতিষ্ঠান হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করার চেষ্টা আমাদের অব্যাহত থাকবে।

তিনি আরও বলেন, বর্তমানে আমাদের এই বিদ্যালয়ে শিক্ষার্থীদের তুলনায় শ্রেণীকক্ষ অনেক কম রয়েছে। শ্রেণীকক্ষের অভাবে ঠিকমত ক্লাস করাতে পারছি না। এমনকি আমরা ছাত্রীদের জন্য একটি কমন রুম দিতে পারছি না। কোন অনুষ্ঠানের জন্য আমাদের অডেটোরিয়াম রুমেরও অভাব রয়েছে। পাশাপাশি বিদ্যালয়ে বহিরাগত বখাটেদের উৎপাত থেকে ও বিদ্যালয়ের শৃংখলা বজায় রাখতে সীমান প্রাচীর বা বাউন্ডারী ওয়াল দেওয়া খুবই জুরুরী।

প্রধান শিক্ষক বলেন, বিদ্যালয়ের সুনাম অক্ষুণ বজায় রাখতে অবদান রাখার জন্য মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা, উপজেলা প্রশাসন, বিদ্যালয়ের ম্যানেজিং কমিটিসহ অন্যান্য সকল সদস্য ও আমার সহযোদ্ধাদের প্রতি ধন্যবাদসহ কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করছি।

spot_img
spot_img

জনপ্রিয় সংবাদ

spot_img
spot_img

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে
Captcha verification failed!
ক্যাপচা ব্যবহারকারীর স্কোর ব্যর্থ হয়েছে। আমাদের সাথে যোগাযোগ করুন!
error: Content is protected !!