সিনিয়র প্রতিবেদক :
ঢাকার দোহারে পদ্মা নদীতে ঘন কুয়াশায় ২টি স্পিড বোটের সংঘর্ষের ঘটনায় নিহত আরও ২ জনের লাশ উদ্ধার করেছে চরভদ্রাসন ও দোহার ফায়ার সার্ভিসের ডুবুরি দল। নিহত ২ জন হলেন, ফরিদপুর জেলার কানাইপুর গ্রামের কাশেম মৃদ্ধার ছেলে দাউদ মৃধা (৪০) ও ফরিদপুরের চরভদ্রাসন উপজেলার গাজিরটেক ইউনিয়নের চর-তেলিডাঙ্গী গ্রামের কুদ্দুস খন্দকারের ছেলে রানা খন্দকার (৪০)।
ফরিদপুর জেলার চরভন্দ্রাসন উপজেলা নির্বাহী অফিসার তানজিলা কবির ত্রপা ও চরভদ্রাসন থানা অফিসার ইনচার্জ মিন্টু মন্ডলের সার্বিক তত্বাবধানে মঙ্গলবার (৭ ফেব্রুয়ারী) বেলা ১১ টা থেকে বিকেল ৫টা পর্যন্ত দোহার ও ফরিদপুরের পদ্মার সীমানা ঝাউকান্দা এলাকায় দুটি ডুবুরি দল উদ্ধার কাজ পরিচালনা করে এ লাশ উদ্ধার করা হয় বলে নিশ্চিত করেছেন চরভদ্রাসন ফায়ার সার্ভিসের ইনচার্জ মোঃ মর্তুজা ফকির ও দোহার ফায়ার সার্ভিসের স্টেশন কর্মকর্তা তামিম হাওলাদার।
এ ছাড়াও এই দুর্ঘটনায় ফরিদপুর পৌরসভার জয় গোপাল গোস্বামী এর ছেলে বলরাম গোস্বামী, চরভদ্রাসন সদরের ফাজেল খার ডাঙ্গী গ্রামের মৃত. চান মিয়ার ছেলে শহিদুল ইসলাম ও আকটেরচর ইউনিয়নের মনিকোঠা বাজার সংলগ্ন এলাকার খোকন নামের এক ব্যাক্তির নিখোঁজ রয়েছে বলে দাবী করেছেন তাদের পরিবারের লোকজন।
দোহার উপজেলার ফায়ার সার্ভিসের স্টেশন কর্মকর্তা তামিম হাওলাদার জানান, আমাদের যে ডুবুরি দল ঢাকা থেকে এসেছে তারা আজকে দুইটি লাশ উদ্ধার করেছে। তাদের কাছে তথ্য আছে আরও কয়েকজন নিখোঁজ রয়েছে সে জন্য তারা আগামীকাল সকাল থেকে আবারো উদ্ধার অভিযান পরিচালনা করবেন।
দূর্ঘটনায় নিহতদের লাশ উদ্ধার শেষে রাতেই চরভন্দ্রাসন উপজেলা নির্বাহী অফিসার তানজিলা কবির ত্রপা ও চরভদ্রাসন থানা অফিসার ইনচার্জ মিন্টু মন্ডল লাশের পরিচয় সনাক্ত করে স্ব স্ব স্বজনদের নিকট লাশ হস্তান্তর করেন।
স্থানীয়রা জানান, স্পিড বোট মালিকের গাফিলতি কারনে এই দূর্ঘটনা সংগঠিত হয়েছে। এছাড়াও বোট চালকরা টাকার জন্য অতিরিক্ত যাত্রী বহন করে। এমনকি তাদের স্পিড বোটে লাইভ জেকেটও থাকে না।
উল্লেখ্য গত রবিবার (৫ ফেব্রুয়ারী) সকাল ৯টার দিকে পদ্মা নদীতে দুটি স্পিড বোটের মুখোমুখি সংঘর্ষে দুটি বাহনই উল্টে যায়। স্থানীয়রা জানায় গত শনিবার (৪ ফেব্রুয়ারী) বিকেল হতে ফরিদপুরের বিভিন্ন যায়গা থেকে দোহার উপজেলার ঐতিহ্যবাহী নুরুল্লাহ্পুরের মেলা দেখতে আশে ভক্ত ও দর্শনার্থীরা। তারা সারারাত মেলা উপভোগ করে পরের দিন রবিবার সকালে মৈনুটঘাট থেকে স্পিড বোটে উঠে। এ সময় স্পিড বোটে ঢাকা যাতায়াতের যাত্রীও ছিল। বোডটি দোহার ও চরভদ্রাসন বর্ডার এলাকায় পৌঁছালে অপর দিক থেকে আসা যাত্রী বিহীন একটি বোটের সাথে মুখোমুখি সংঘর্ষ ঘটে। এ সময় বোট উল্টে সকলে নদীতে পরে যায়। পরে কাছেই থাকা অপর একটি স্পিড বোট ও স্থানীয়দের সহযোগীতায় কয়েকজনকে উদ্ধার করা সম্ভব হয়। এ সময় গুরতর আহত অবস্থায় শুকুমার হালদার ও মো. মতিউর রহমানকে দোহার উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিলে কর্তব্যরত চিকিত্সক শুকুমার হালদারকে মৃত ঘোষনা করেন। আহত মতিউর রহমান উন্নত চিকিত্সার জন্য ঢাকার আয়েশা মেমোরিয়াল হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছে।