দানিচ খান জুয়েল, সৌদি আরব ও মধ্যেপ্রাচ্যের সিনিয়র প্রতিবেদক :
ইসরায়েল এর ফিলিস্তিনির উপর শান্তি বিনষ্টকারী যে কোন ধরনের উসকানি মূলক কর্মকান্ডের নিন্দা জানিয়েছে বাংলাদেশ। পাশাপাশি রাজধানী হিসেবে পূর্ব জেরুজালেমের সাথে ১৯৬৭ সালের সীমান্তের ভিত্তিতে একটি সার্বভৌম ও কার্যকর রাষ্ট্রের জন্য ফিলিস্তিনের ভ্রাতৃপ্রতিম জনগণের অবিচ্ছেদ্য অধিকার আদায়ে অঙ্গীকার পূনর্ব্যক্ত করেছে। সম্প্রতি জেরুজালেমের আল-আকসা মসজিদে সংঘটিত ইসরাইলের উসকানি মূলক কর্মকান্ড, ফিলিস্তিনের বিরুদ্ধে চলমান ইসরাইলি আগ্রাসন বন্ধে আজ জেদ্দায় অনুষ্ঠিত ইসলামী সহযোগিতা সংস্থা-ওআইসির নির্বাহী কমিটির জরুরী সভায় সৌদি আরবে নিযুক্ত বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত ও ওআইসির স্থায়ী প্রতিনিধি রাষ্ট্রদূত ড. মোহাম্মদ জাবেদ পাটোয়ারী বিপিএম (বার) এ কথা বলেন।
রাষ্ট্রদূত আরও বলেন, জাতিসংঘের প্রাসঙ্গিক প্রস্তাবনা, আরব শান্তি উদ্যোগ এবং কোয়ার্টেট রোড ম্যাপ অনুযায়ী ফিলিস্তিন ইস্যুতে ব্যাপক ও টেকসই সমাধানের বিষয়ে বাংলাদেশ তার নীতিগত অবস্থান অব্যাহত রেখেছে।
রাষ্ট্রদূত বলেন, ফিলিস্তিনে ইসরাইলী হামলা অব্যাহত রয়েছে এবং সময়ের সাথে সাথে পরিস্থিতি আরও খারাপ হচ্ছে। ২০২২ সালে ১৫০ জনের অধিক ফিলিস্তিনি নাগরিক ইসরাইলি আগ্রাসনে নিহত হয়েছে- যা এযাবৎকালের মধ্যে সর্বোচ্চ। সম্প্রতি, ইসরাইলের নতুন সরকার গঠনের পরপরই জাতীয় নিরাপত্তা বিষয়ক মন্ত্রী বেন গভির পবিত্র আল আকসা মসজিদ পরিদর্শন করেছেন যা অত্যন্ত উত্তেজনামূলক পরিস্থিতির সৃষ্টি করেছে এবং স্থানীয় ও আঞ্চলিক নিরাপত্তার তা জন্য হুমকি স্বরুপ। এই ধরনের উসকানিমূলক কর্মকান্ড মধ্যপ্রাচ্যের স্থায়ী শান্তি প্রক্রিয়াকে আরও দূরে ঠেলে দিবে বলে মন্তব্য করেন রাষ্ট্রদূত।
রাষ্ট্রদূত মোহাম্মদ জাবেদ পাটোয়ারী আরও বলেন, আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের উদাসীনতায় দখলদার বাহিনী ইসরাইলের নৃশংসতা এবং আগ্রাসন সাম্প্রতিক বছরগুলোতে বেড়ে চলেছে, যা অত্যন্ত উদ্বেগজনক। নতুন বৈশ্বিক সংকট এবং সংঘাত অধিকৃত ফিলিস্তিন ভূখÐের গুরুতর পরিস্থিতি থেকে জাতিসংঘ এবং আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের মনোযোগ যাতে সরিয়ে না নেয় সে বিষয়ে সকলকে সজাগ থাকার আহবান জানান তিনি।
রাষ্ট্রদূত বলেন, ফিলিস্তিনের অধিবাসীরা একসময় নির্যাতিত ইহুদিদের আশ্রয় দিয়েছিল, আর সেই ইহুদিরাই এখন নিরস্ত্র ফিলিস্তিনিদের ঘরবাড়ি, পরিবার এবং স্বাধীন রাষ্টের প্রত্যাশা ধ্বংস করছে। ইসরাইলের আগ্রাসন বন্ধ, ন্যায় বিচার প্রতিষ্ঠা ও স্বাধীন ফিলিস্তিন রাষ্ট্র গঠনে ওআইসিকে আরো জোরালো ভূমিকা রাখার জন্য প্রয়োজন বলে রাষ্ট্রদূত মন্তব্য করেন।
সভার শুরুতে ওআইসি মহাসচিব ও ফিলিস্তিনের স্থায়ী প্রতিনিধি ইসরাইলের সাম্প্রতিক আগ্রাসনের বিষয়ে সভাকে অবহিত করে। পরে উন্মুক্ত আলোচনায় বাংলাদেশ ছাড়াও জর্ডান, তুরস্ক, মরোক্কো, সংযুক্ত আরব আমিরাত, কুয়েত, মিশর, মালয়শিয়া, ইন্দোনেশিয়া, নাইজেরিয়া সহ অন্যান্য দেশের স্থায়ী প্রতিনিধিরা ফিলিস্তিনের প্রতি তাঁদের সমর্থন জানিয়ে বক্তব্য প্রদান করেন। সভা শেষে, ইসরাইলি আগ্রাসনের নিন্দা জ্ঞাপন ও তা বন্ধে জাতিসংঘসহ আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়কে যথাযথ ব্যবস্থা নেয়ার আহবান জানিয়ে একটি যৌথ বিবৃতি গৃহীত হয়।