নবাবগঞ্জ থেকে সিনিয়র প্রতিবেদক :
অসহযোগ ও স্বদেশী আন্দোলনের মহান বিপ্লবী অনিল চন্দ্র রায়ের ৭১তম মৃত্যু বার্ষিকী আজ। তিনি ঢাকার নবাবগঞ্জ উপজেলার যন্ত্রাইল ইউনিয়নের গোবিন্দপুর গ্রামের কৃতি সন্তান ছিলেন। ১৯৫২ সালের ৬ জানুয়ারি তিনি মৃত্যুবরণ করেন। ১৯০১ সালের ২৬মে মানিকগঞ্জের বায়রা গ্রামে. মামা বাড়িতে তিনি জন্মগ্রহন করেন।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, মহাত্মা গান্ধী ও নেতাজী সুভাষ চন্দ্র বসুর স্নেহধন্য ছিলেন অনিল চন্দ্র রায়। মহাত্মা গান্ধীর ঢাকায় আগমন হয়েছিল তাঁরই নেতৃত্বে। তারই নামকরণের স্বাক্ষর রয়েছে নবাবগঞ্জের কলাকোপা ইউনিয়নের সমসাবাদ গ্রামের ‘গান্ধীর মাঠ’। যেখানে স্বদেশী আন্দোলনের সভা করেছিলেন মহাত্মা গান্ধী। যা আজো এলাকাবাসীর মাঝে ‘গান্ধীর মাঠ’ নামে স্মৃতি হয়ে আছে।
বিপ্লবী অনিল চন্দ্র রায়ের পিতা অরুণ চন্দ্র রায় ছিলেন ঢাকা জেলার সরকারি শিক্ষা বিভাগের উচ্চ পদাধিকারী। তাঁর স্ত্রী লীলা নাগও ছিলেন বিপ্লবী। লীলা নাগ ছিলেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রথম ছাত্রী।
বিপ্লবী অনিল চন্দ্র রায় ১৯১৪ সালে ঢাকা কলেজিয়েট স্কুলে অষ্টম শ্রেণিতে পড়াকালীন সময়ে জড়িয়ে পড়েন বিপ্লবী সংগঠনের সাথে। ১৯১৯ সালে ঢাকা কলেজ থেকে আইএ পরীক্ষায় পাস করেন তিনি। ১৯২১ সালে বিএ পাস এবং ১৯২৩ সালে ইংরেজিতে এমএ পাস করেন।
আপন প্রতিভা গুণে ১৯২০ সালের দিকে ঢাকার সংগঠনের নেতৃত্ব চলে আসে তার হাতে। ১৯৩০ সালে কারারুদ্ধ থাকাকালীন সংঘের দায়িত্ব নিয়েছিলেন তাঁর স্ত্রী লীলা নাগ। তাঁর রাজনৈতিক জীবনে তিনি ও তাঁর স্ত্রী বারবার কারাবরণ করেছেন। কারাগারে থাকাকালীন রচনা করেছেন বিবাহ ও পরিবারের ক্রমবিকাশ, হেগেল প্রসঙ্গে, ইতিহাসের বস্তুবাদী ব্যাখ্যা, সমাজতন্ত্রীর দৃষ্টিতে মার্কসবাদ ইত্যাদি গ্রন্থ। পরবর্তীতে ভারতের প্রথম লোকসভা নির্বাচনে অনিল চন্দ্র রায় প্রার্থী হয়েছিলেন।
‘বিপ্লব ও বিপ্লবীর মৃত্যু নেই’ কথাটি আজ অযতœ অবহেলায় গুমরে কাঁদছে। এ মহান বিপ্লবীর জন্ম-মৃত্যুর দিন এলেও নিরবে কেটে যায়। এখন শুধু তিনি আছেন ইতিহাসের পাতায়। বাংলা হরফের বর্ণমালা হয়ে। এ বিপ্লবীর মতোই অযতœ অবহেলায় পড়ে আছে নবাবগঞ্জের গোবিন্দপুর গ্রামে বিপ্লবীর পৈত্রিক বাড়িটিও।
স্থানীয় সুশিল সমাজের মতামত, বিপ্লবীর পৈত্রিক বাড়িটি হতে পারে অসহযোগ ও স্বদেশী আন্দোলনের স্মৃতি সংরক্ষণাগার। যেখানে সারাদেশের ব্রিটিশ বিরোধী ইতিহাস সংরক্ষণাগার হিসেবে ব্যবহার করা যেতে পারে।