রাজবাড়ী প্রতিনিধি :
রাজবাড়ীর গোয়ালন্দ উপজেলার দৌলতদিয়া ঘাট এলাকায় দেখা মিলেছে বিরল প্রজাতির এক কালোমুখো হনুমানের। স্থানীয়দের অবাক করে দিয়ে হনুমানটি এখন মানুষের সঙ্গেই মিশে যাচ্ছে। শনিবার দৌলতদিয়া ৩নং ফেরি ঘাট এলাকার আব্দুর রহমানের (৫৫) চায়ের দোকানের টেবিলে চুপচাপ বসে থাকতে দেখা যায় দলছুট এ হনুমানটিকে। দৃশ্যটি দেখে অনেকের মনে হচ্ছিল, যেন কোন সভায় বক্তব্য রাখছে সে আর সবাই মনোযোগ দিয়ে শুনছে।
স্থানীয়রা ও বন বিভাগ মনে করছে, খাদ্যের অভাবে হনুমানটি যশোর জেলার কেশবপুর থেকে দলছুট হয়ে ফলবাহী ট্রাকের সাথে দৌলতদিয়ায় চলে এসেছে। অনেক যাত্রী নিশ্চিত করে জানান, যশোর থেকে ছেড়ে আসা কলাবাহী ট্রাকে চড়ে এ এলাকায় আসে প্রাণীটি।
এখন প্রতিদিনই তাকে দেখতে ভিড় করছেন শিশু, নারী-পুরুষসহ দৌলতদিয়া ঘাট দিয়ে যাতায়াতকারী যাত্রীরা। কেউ কলা, কেউবা পাউরুটি কিনে খাওয়াচ্ছেন।
দৌলতদিয়া ফেরিঘাট এলাকার বিকাশ-ফ্লেক্সিলোড দোকানী মো. জোয়ায়ের হোসেন বলেন, “বেশ কিছুদিন ধরে হনুমানটি এ এলাকায় ঘুরে বেড়াচ্ছে। প্রথমদিকে গাছের মগডাল ও নির্জন স্থানে থাকলেও ধীরে ধীরে মানুষের কাছাকাছি আসছে। এখন দোকানের বেঞ্চে বসে কলা-খাবার খাচ্ছে। তবে কাউকে আক্রমণ করতে দেখিনি।”
চায়ের দোকানী আব্দুর রহমান জানান, “বেশিরভাগ সময়ই হনুমানটি আমার দোকানে বসে থাকে। স্থানীয়দের পাশাপাশি যাত্রীরাও কাছে গিয়ে ছবি তোলে, খাবার দেয়।”
গোয়ালন্দ উপজেলা বন কর্মকর্তা মো. আজিজুল ইসলাম বলেন, “ধারণা করা হচ্ছে কেশবপুর এলাকা থেকে কলাবাহী ট্রাকে চড়ে এ পর্যন্ত এসেছে হনুমানটি। তবে সুযোগ পেলে আবার আগের এলাকায়ও ফিরে যেতে পারে। কালোমুখো হনুমান খুবই নিরীহ প্রাণী, মানুষকে আক্রমণ করে না। তবে এদের বিরক্ত করা উচিত নয়।”
তিনি আরও জানান, একসময় খুলনা-যশোর অঞ্চলে প্রচুর কালোমুখো হনুমান দেখা যেত। বর্তমানে শুধুমাত্র যশোর জেলার কেশবপুরে সামান্য কিছু টিকে আছে। খাদ্যাভাবে সেখান থেকেও দলছুট হয়ে বিভিন্ন স্থানে ছড়িয়ে পড়ছে এবং অনেকে মারা যাচ্ছে।