29 C
Dhaka
শুক্রবার, আগস্ট ২২, ২০২৫

মানিকগঞ্জে প্রশাসনের সহায়তায় কৃষি জমির মাটি বাণিজ্যে

spot_img

আরো সংবাদ

spot_img
spot_img

মানিকগঞ্জ থেকে দেওয়ান আবুল বাশার :
মানিকগঞ্জে প্রশাসনের সহায়তায় ফসলি জমি থেকে মাটি বাণিজ্যের উৎসবে মেতেছে ভূমি খেকোর একটি চক্র । প্রায় ২০ থেকে ২৫ ফুট গভীর করে মাটি কাটার ফলে আশপাশের কৃষিজমিও ভেঙে পড়ছে। এ ঘটনায় উদ্বিগ্ন হয়ে পড়েছে ফসলি জমির মালিক ও কৃষকরা।

জানাগেছে, সিঙ্গাইর উপজেলার একটি পৌরসভা ও ১১টি ইউনিয়নের বিস্তীর্ণ কৃষি জমির মাটি দিনরাত সমানতালে লুটে নিচ্ছে চিহ্নিত ভূমিদস্যু চক্রটি। প্রভাবশালী ঐ চক্র উপজেলা প্রশাসন, পুলিশ প্রশাসন ও ইউনিয়ন ভূমি উপ-সহকারি কর্মকর্তাদের ম্যানেজ করে মাটি হরিলুটের মহোৎসবে মেতে উঠেছে। সড়ক-মহাসড়ক ব্যবহার করে এসব মাটি নির্বিঘ্নে ইটভাটাসহ বিভিন্ন জায়গায় বিক্রি করছে চক্রটি।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, উপজেলার বলধরা ইউনিয়নেই রয়েছে ২৩টি ইটভাটা। এসব ভাটায় মাটি সরবরাহ করে আব্দুল কুদ্দুস ওরফে কুদ্দুস কোম্পানি এবং তার সহযোগীরা।

মঙ্গলবার (৪ ফেব্রুয়ারি) সরেজমিন দেখা গেছে, বলধরা ইউনিয়নের সোনাখালির চক, আত্রাইল চক, বেরুন্ডির চকের তিন ফসলি জমির টপ সয়েল ভেকু (এক্সকেভটর) দিয়ে কেটে নেওয়া হচ্ছে।

কথা হয় সিংগাইর উপজেলার বলধারা ইউনিয়নের তেলিখোলা গ্রামের জয়নাল আবেদিনের সাথে। কান্না বিজড়িত কন্ঠে তিনি বলেন, কুদ্দুস কোম্পানি ফসলি জমির মাটি বাণিজ্য করতে যে ঘের দিয়েছে সেখানে আমার ৮ থেকে ১০ পাখি কৃষি জমি রয়েছে। ইতোমধ্যে আমার প্রায় ১বিঘা জমি ভেঙে গেছে। ঘেরের ভেতরের জমি চাষাবাদেও সমস্যা হচ্ছে। এর আগে প্রতিকার চেয়ে স্থানীয় প্রশাসন ও জেলা প্রশাসন বরাবর আবেদন করেও কোন লাভ হয়নি। বাধ্য হয়ে কৃষিজমি রক্ষা ও অবৈধ ইট ভাটা বন্ধের জন্য আদালতের শরণাপন্ন হই। আমার আরজির প্রেক্ষিতে বিজ্ঞ আদালতের নির্দেশে তিনটি ভাটা গুড়িয়ে দেওয়া হয়। এতে ক্ষিপ্ত হয়ে আ’লীগের দোসর কুদ্দুস ও তার সহযোগীরা আমাকে মারপিট করে।

একই এলাকার কৃষক শহিদুল ইসলাম বলেন, এই চকে আমার মাত্র ৩৫ শতাংশ জমি রয়েছে। এই জমি চাষাবাদ করে কোনরকম সংসার চালাই। কিন্তু কুদ্দুস কোম্পানি ভেকু দিয়ে মাটি কাটার জন্য মেশিন দিয়ে আমার জমিতে পানি ফেলে চাষাবাদের অনুপযোগী করে রাখছে। কয়েকমাস পার হয়ে গেলেও আমি কোন চাষাবাদ করতে পারতেছি না।

তেলিখোলা গ্রামের তারা মিয়া, সৈয়দ আলী মুনসি, আনসার, শামসুদ্দিনসহ ২০/২৫ জন কৃষক এই অপ-তৎপরতা বন্ধে জেলা প্রশাসক সহ সংশ্লিষ্ট ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের আশু হস্তক্ষেপ কামনা করেন।

এ বিষয়ে আব্দুল কুদ্দুস এর সাথে মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, পত্রিকায় লিখে আমার কিছু করতে পারবেন না। সবাইকে ম্যানেজ করেই আমি ব্যবসা করছি।

বলধরা ইউনিয়ন ভূমি উপ সহকারী কর্মকর্তা মো.আতিকুল ইসলাম আতিক অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, গত সোমবার আমি ইউএনও স্যারের নির্দেশে কুদ্দুস কোম্পানির ভেকু বন্ধ করে দিয়েছি। যেখানেই অভিযোগ পাই সেখানেই ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে।

এ বিষয়ে সিঙ্গাইর উপজেলা নির্বাহী অফিসার ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মো. কামরুল হাসান সোহাগ বলেন, কৃষি জমির কাটা বন্ধে নিয়মিত অভিযান পরিচালনা করা হচ্ছে।

spot_img
spot_img

জনপ্রিয় সংবাদ

spot_img
spot_img

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে
Captcha verification failed!
ক্যাপচা ব্যবহারকারীর স্কোর ব্যর্থ হয়েছে। আমাদের সাথে যোগাযোগ করুন!
error: Content is protected !!