নবাবগঞ্জ থেকে সিনিয়র প্রতিনিধি :
ঢাকার নবাবগঞ্জ উপজেলার নয়নশ্রী ইউথ ক্লাবের উদ্যোগে শুক্রবার বিকালে ইছামতি নদীতে নৌকা বাইচ এর আয়োজন করা হয়। এ সময় নৌকা বাইচ উপভোগ করতে দূর-দূরান্ত থেকে নারী পুরুষসহ সব বয়সী মানুষ নৌকা বাইচ দেখতে নদীর তীরে জড়ো হন। নৌকা বাইচে বিভিন্ন এলাকা থেকে সুসজ্জিত ঘাসী নৌকা অংশ গ্রহণ করে।
এদের মধ্যে উল্লেখযোগ্য আলালপুরের মোহাম্মদ আলী মিস্ত্রী, মাঝিরকান্দার খান বাড়ি, শ্রীনগরের আলমপুরের মামা ভাগ্নে, আগলার লিটন এক্সপ্রেস, দেওতলার শিকদার বাড়ি, কাউনিয়াকান্দি কাঞ্চন নগরের নীল তরী ও কৃষ্ণনগরের দাদা-নাতী মোহন ম-ল, খানেপুরের শেখ বাড়ি, সিরাজদিখানের তুফান নৌকা অংশ গ্রহণ করে। এ সময় প্রতিযোগিতার মাধ্যমে জোড়ায় জোড়ায় টান দেয় নৌকাগলো।
নৌকা বাইচ দেখতে আসা দর্শনার্থী রঞ্জিত মন্ডল বলেন, জোড়ায় জোড়ায় ন্যেকা গুলো বেশ কয়েকটি পাল্লা দিয়েছে। আমরা খুব আনন্দ পেয়েছি। এই ঐতিহ্য বাহী নৌকা বাইচ টিকে থাকুক আজীবন।
নৌকা বাইচের উদ্বোধক মো. কামাল হোসেন বলেন, নবাবগঞ্জে নৌকা বাইচের ঐতিহ্য প্রায় শত বছরের। নানা প্রতিকুলতায় এই ঐতিহ্য বাহী নৌকা বাইচ প্রায়ই বিলীন হয়ে যাচ্ছে। গ্রাম বাংলার এই চীর চেনা ঐতিহ্য বাহী নৌকা বাইচ ধরে রাখতে এই আয়োজন করা হয়।
নৌকা বাইচ ঐতিহ্য রক্ষা জাতীয় কমিটির সহ-সভাপতি ডা. হরগোবিন্দ সরকার অনুপ বলেন, নবাবাগঞ্জে নৌকাবাইচের ঐতিহ্য প্রায় শত বছরের। এক দশক আগেও ইছামতী নদীর বিভিন্ন পয়েন্টে পুরো ভাদ্র মাসজুড়ে নৌকাবাইচ হতো। কিন্তু এখন নদীতে পর্যাপ্ত পানি না থাকা ও কচুরিপানার কারণে বাইচে ভাটা পড়েছে। বেশ কয়েকটি পয়েন্টে কচুরীপানা থাকায় এ বছর নৌকা বাইচ আয়োজন করা গেল না। আর এজন্য দায়ী পানি উন্নয়ন বোর্ড। ২০০১ সালে ইছামতী নদীর উৎপত্তিস্থল কাশিয়াখীতে বেড়িবাঁধ দেয়া হয়। কিন্তু পানি উন্নয়ন বোর্ডের অদক্ষতা ও অপরিপক্কতায় বাঁধের ইছামতী-পদ্মা নদীর সংযোগ স্থলে জলকপাট (সুইস গেট) স্থাপন না করে অন্যত্র স্লুইসগেট স্থাপন করা হয়। যে কারণে নদীটি আজ বিলুপ্তির পথে।
পুরস্কার বিতরনী অনুষ্ঠানে নয়নশ্রী ইউথ ক্লাবের সভাপতি সিকদার মোক্তার হোসেন খৈমদ্দির সভাপতিত্বে প্রধান অতিথি হিসেবে ছিলেন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. মতিউর রহমান। এ ছাড়াও বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন, দোহার সার্কেলের এএসপি আরিফুল রহমান আরিফ ও নবাবগঞ্জ থানার ওসি সিরাজুল ইসলাম শেখসহ আরও অনেকে।



